West Bengal – সরকারি কর্মীদের কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নের কি নির্দেশ এলো?
PM Awas Yojana West bengal
পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) তথা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প সরকারের প্রস্তাবনায় চালু হলেও অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করে থাকেন সরকারি কর্মী তথা Government Employee ও অফিসারেরা। আর সেই প্রকল্প চালু ও সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে কোন গাফিলতি থাকলে তা সরাসরি জনগরের পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটায়। আর সেই কারনে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা তথা PM Awas Yojana নিয়ে সরকারি কর্মীদের কড়া নির্দেশ দিলো পশ্চিমবঙ্গ সরকার তথা নবান্ন।
West Bengal PM Awas Yojana Head Counting Instructions
এমনিতেই PM Awas Yojana এর টাকা দিচ্ছে না বলে অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার। কেন্দ্র টাকা না দিলেও রাজ্য সেই টাকা পরিশোধ করবে বলে জানিয়েছে। আর এই অবস্থায় দাড়িয়ে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকা তৈরিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এবার কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে নবান্ন মারফত। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে যদি তারা আবাস প্রকল্পে অস্বচ্ছতার জন্য দায়ী হন।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য হলো, এই প্রকল্পের আওতায় সুবিধাভোগীদের তালিকা সঠিকভাবে তৈরি করা এবং এর প্রক্রিয়ায় কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তির হস্তক্ষেপ যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করা। অর্থাৎ বার বার অভিযোগ এসেছিলো যে, নিজের লোকেদের ঘর পাইয়ে দেওয়ার নামে আবাস যোজনা নিয়ে দুর্নীতি হচ্ছে। এবার সেই ঘটনার পুনঃবৃত্তি যাতে না ঘটে সেই দিকে কড়া নজর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের (Government of West Bengal).
নবান্নের নির্দেশিকা
গত ১ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে নবান্ন থেকে প্রকাশিত নির্দেশিকার মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এই নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। সরকারী কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করতে চায় যে, আবাস যোজনার তালিকা সঠিক ও নিরপেক্ষভাবে প্রস্তুত হচ্ছে। এজন্য বিভিন্ন স্তরের সরকারি কর্মচারীদের উপর দায়িত্ব আরোপ করা হয়েছে। তালিকা যাচাইয়ের প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন থানার অফিসারদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সরকারি কর্মীদের চাপ বাড়লো
আবাস প্রকল্পের যোগ্য প্রার্থীদের পুর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করতে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে, যা সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে গঠিত। এই দলে থাকবেন বিডিও, মহকুমা শাসক ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষ, যারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের যাচাই করবেন। এই যাচাই প্রক্রিয়ায় ভিডিওগ্রাফি করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে। আর সেই নির্দেশ যাতে সফল ভাবে সারা রাজ্য জুড়ে পরিচালত হয়, তার জন্য নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনার অধীনে চলতি বছরে আরও তিন কোটি বাড়ি তৈরি হবে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে। নবান্নের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সুবিধাভোগীদের তালিকা প্রকাশের পরেও তিনটি স্তরে যাচাই করা হবে। বিডিও, মহকুমা শাসক এবং জেলাশাসকেরা ইচ্ছামতো যে কোনও নামের সত্যতা যাচাই করতে পারবেন। যদি কোন ত্রুটি বা অনিয়ম ধরা পড়ে সেক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক কে জবাবদিহি করা হতে পারে। এমনটাই বলা হয়েছে নির্দেশিকায়।
অনিয়ম হলে কড়া পদক্ষেপ
নবান্ন কর্তৃপক্ষ জানান, যদি কোনো ভুয়া নাম পাওয়া যায়, তাহলে তা ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে বলে গণ্য হবে এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারের পক্ষ থেকে জেলাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে যে, প্রকল্পের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে যে কোনও অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপভোক্তাদের অভিযোগ জানাতে, প্রত্যেকটি বিডিও অফিসে অভিযোগ পত্র জানানোর জন্য বাক্স রাখা হবে। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই পাঁচটি কাজের দিনের মধ্যে তা যাচাই করতে হবে এবং অভিযোগকারীদেরকে ব্যবস্থা সম্পর্কে জানিয়ে দিতে হবে।
আরও পড়ুন, পুজোর আগেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের আবার বেতন বাড়লো। কোর্টের রায় মেনে নিলো।
নবান্নের এই উদ্যোগগুলো রাজ্যের বিশাল দরিদ্র জনসংখ্যার জন্য আবাসন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগে আশা করা হচ্ছে যে, আবাস যোজনার আওতায় সঠিক ও প্রয়োজনীয় সুবিধা প্রাপ্তির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা উন্নত হবে।
এদিকে সরকারি কর্মীদের এই নির্দেশিকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, এবার সম্পূর্ণ নিয়ম মেনে তালিকা প্রস্তুত করে কেন্দ্রের কাছে টাকা আদায় করার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হবে। বাংলার বিরুদ্ধে কেন্দ্রের বঞ্চনা আর হতে দেওয়া চলবে না। এবার এটাই দেখার রাজ্যের এই কড়া পদক্ষেপে গরিব মানুষের মুখে হাসি ফুটবে কিনা! পরবর্তী আপডেট পেতে বাংলা একাডেমী ফলো করুন।