৬০০ কোটিতে মহাকাশ অভিযান, বিশ্বের দরবারে নয়া রেকর্ড গড়তে চলেছে ভারত।
মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে এবারে আরও এক নতুন পালক জুড়তে চলেছে ভারতের মুকুটে। গোটা অভিযান নিশ্চিত করার পরে শেষ মুহূর্তে এসে চন্দ্রযান ২ বিগড়ে যায়, ফলত চন্দ্রযান ২ অসম্পূর্ণই রয়ে যায়। কিন্তু এবারে চন্দ্রযান ২ -এর ব্যর্থতাকে মুছে দিতে চন্দ্রযান ৩ পরিকল্পনা করেছে ভারত। চন্দ্রযান ৩ -এর ক্ষেত্রে খরচ নিয়ে সমগ্র বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। আজ্ঞে হ্যাঁ, চন্দ্রযান ৩ -এর খরচ নিয়ে সমগ্র বিশ্বকে রীতিমতো অবাক করে দিয়েছে ভারত।
কবে থেকে চন্দ্রযান ৩ শুরু হতে চলেছে?
বিভিন্ন সূত্রে তরফে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে, আগামী ১৪ ই জুলাই ভারতীয় মহাকাশ গবেষণাগার থেকে চন্দ্রযান ৩ উৎক্ষেপিত হতে চলেছে। বিগত ৫ ই জুলাই চন্দ্রযান ৩ -এর সাথে LVM3 রকেট যুক্ত করার কাজ সম্পন্ন করেছেন বৈজ্ঞানিকরা, এমনটাই দাবি করা হয়েছে এই সমস্ত সূত্রের তরফে প্রকাশিত রিপোর্টে। এর পাশাপাশি আরো জানা গিয়েছে যে, ইতিমধ্যেই চন্দ্রযান ৩ উৎক্ষেপণের ক্ষেত্রে যা যা প্রস্তুতি প্রয়োজন সমস্তটাই তারা সম্পন্ন করেছেন, এবার শুধু উৎক্ষেপণের অপেক্ষায় দিন গুনছেন বৈজ্ঞানিকরা।
চন্দ্রযান ৩ -এর জন্য কত টাকা খরচ হয়েছে?
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টে জানা গিয়েছে যে, চন্দ্রযান ২ -এর তুলনায় চন্দ্রযান ৩ -এর ক্ষেত্রে নিত্যনতুন যন্ত্র থেকে শুরু করে প্রযুক্তি সমস্তটাই ব্যবহার করেছেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। চন্দ্রযান ২ -এর সময় বেশ কিছু ছোটখাটো ভুলের কারণে শেষ মুহূর্তে সেটি ভেঙে পড়ে। এবারে যাতে চন্দ্রযান ২ -এর মত একই ভুলের পুনরাবৃত্তি না ঘটে তা নিশ্চিত করার জন্যই চন্দ্রযান ৩ -এর ক্ষেত্রে নিত্যনতুন মেশিন এবং প্রযুক্তি উভয়ই ব্যবহার করেছেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। আর এই সমস্ত নিত্যনতুন যন্ত্র থেকে শুরু করে প্রযুক্তি সমস্ত ব্যবহারের জন্য ইসরোর বিজ্ঞানীরা খরচ করেছেন মাত্র ৬১৫ কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই ইসরোর তরফে চন্দ্রযান ৩ -এর জন্য প্রয়োজনীয় খরচের ব্যাপারে তথ্য প্রকাশ করা হলে সমগ্র বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশগুলির বৈজ্ঞানিকরা রীতিমতো অবাক হয়ে গিয়েছেন। এমনকি চন্দ্রযান ৩ মিশনের ক্ষেত্রে নিজেদের পূর্ববর্তী রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা।
আরও পড়ুন:- স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তরফে গ্রাহকদের জন্য এক নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আনা হল।
ইতিপূর্বে চন্দ্রযান ২ মিশনের জন্য ইসরোর তরফে ৯৭৮ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছিল। কিন্তু এবারে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬১৫ কোটি টাকায় অর্থাৎ চন্দ্রযান ৩ এর খরচ চন্দ্রযান ২ এর তুলনায় ৩৬৩ কোটি টাকা কমেছে। যদিও ইতিপূর্বে চন্দ্রযান ১ এর জন্য ভারত সব থেকে কম টাকা খরচ করেছিল। ২০০৮ সালের এই মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রে খরচ করা হয়েছিল ৩৮৬ কোটি টাকা, যা সমগ্র ভারত তথা বিশ্বের নাগরিকদের চোখ রীতিমতো কপালে তুলে দিয়েছিল। আর এবারে যথেষ্ট প্রযুক্তি এবং যন্ত্রাদি ব্যবহারের পরেও চন্দ্রযান ৩ -এর খরচ ৬১৫ কোটি টাকা হওয়ায় পুনরায় ভারতীয় বৈজ্ঞানিকেরা সমগ্র বিশ্বের কাছে প্রশংসার দাবিদার রুপে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের আর্থিক অবস্থা যেকোনো ক্ষেত্রেই দেশের উন্নতির মূল অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই বাঁধাকে অতিক্রম করে বারংবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতির নজির বয়ে এনেছে ভারতীয় বৈজ্ঞানিক, খেলোয়াড়, অ্যাথলেটিক সহ অন্যান্য ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা। আর এবারে মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রেও আর্থিক প্রতিকূলতাকে দূর করে কম খরচে উন্নত প্রযুক্তি এবং নানাবিধ নিত্যনতুন যন্ত্রপাতি সহকারে চন্দ্রযান ৩ প্রস্তুত করে দেখিয়েছে ভারতীয় বৈজ্ঞানিকেরা। অন্যভাবে বলা যেতে পারে বিশ্বের বিভিন্ন বিখ্যাত দেশের একটি সিনেমার বাজেটের মধ্যেই ভারতীয় চন্দ্রযান ৩ -এর বাজেট ফিট করে গিয়েছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের কথা বাদ দিলেও ভারতের নিজস্ব বলিউড সিনেমা কিংবা বিশেষ উল্লেখযোগ্য তামিল, তেলেগু সিনেমার বাজেটও চন্দ্রযান ৩ -এর বাজেটের সমান হয়ে থাকে। আর এত কম বাজেটের মধ্যে একটি সম্পূর্ণ মহাকাশ অভিযান প্ল্যান করার মধ্যে দিয়ে ভারতীয় বৈজ্ঞানিকেরা সমগ্র বিশ্বের সাধারণ মানুষ তথা বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে বড় বড় ব্যক্তিত্বদের নজর কেড়েছেন।