আবেদন করুন পারম্পরিক স্কলারশিপে এবং শিক্ষাক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সমস্ত খরচ পেয়ে যান।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার ছাড়াও বহু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রাজ্যের দুঃস্থ অথচ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন প্রকার স্কলারশিপ লঞ্চ করে থাকে। আর এইরকমই একটি বেসরকারি স্কলারশিপ হল পারম্পরিক স্কলারশিপ। রাজ্যের উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা করার জন্য পারম্পরিক- দ্যা ট্র্যাডিশন ফাউন্ডেশনের তরফে এই স্কলারশিপ কার্যকর করা হয়েছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই সমস্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের তরফে কার্যকরী স্কলারশিপগুলি প্রচারে আসে না। যার কারণে প্রয়োজনশীল ছাত্র-ছাত্রীরা এই সমস্ত স্কলারশিপের আওতায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারেন না। একইভাবে রাজ্যের খুব কম সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী পারম্পরিক স্কলারশিপ -এর সম্পর্কে সমস্ত সঠিক তথ্য জানেন। আজকের এই পোস্টে আমরা পারম্পরিক- দ্যা ট্র্যাডিশন ফাউন্ডেশনের তরফে কার্যকরী স্কলারশিপ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি।
পারম্পরিক স্কলারশিপের আওতায় কত টাকার অনুদান পাওয়া যায়?
পারম্পরিক- দ্যা ট্র্যাডিশন ফাউন্ডেশনের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, পারম্পরিক স্কলারশিপের আওতাধীন ছাত্র-ছাত্রীদের কত টাকার অনুদান দেওয়া হবে তা সম্পর্কে কোন নির্দিষ্ট টাকার অংক নির্ধারণ করা হয়নি। একজন ছাত্র অথবা ছাত্রী কোন কোর্সে কত বছরের জন্য পড়াশোনা করছেন তার ওপর নির্ভর করে এই স্কলারশিপের আওতায় উক্ত ছাত্র-ছাত্রীকে একটি নির্দিষ্ট অংকের অনুদান দেওয়া হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি পরম্পরিক স্কলারশিপের অধীনে ছাত্র-ছাত্রীদের চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রয়োজনীয় সমস্ত বইও কিনে দেওয়া হয়ে থাকে।
কারা কার ওপরে স্কলারশিপের আওতায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন?
১. পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী ছাত্র-ছাত্রীরাই কেবলমাত্র এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন।
২. যেসকল ছাত্র অথবা ছাত্রী উচ্চমাধ্যমিকে ৮০ শতাংশ নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে বর্তমানে ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল, নার্সিং -এর মত প্রফেশনাল কোর্স অথবা স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করছেন তারা পারম্পরিক স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। এছাড়াও ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখি, যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করছেন তাদের বিগত পরীক্ষায় ন্যূনতম ৮০ শতাংশ নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে, তবে তারা পারম্পরিক স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানানোর সুযোগ পাবেন।
৩. যে সমস্ত ছাত্র অথবা ছাত্রীর পরিবারের বাৎসরিক আয় ৫ লক্ষ টাকা বা তার চেয়ে কম তারা এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন।
আরও পড়ুন:- রাজ্য সরকারের শিশুসাথী প্রকল্পের আওতায় মিলবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হার্টের চিকিৎসার সুযোগ।
পারম্পরিক স্কলারশিপের আওতায় নিজের নাম নথিভুক্ত করবেন কিভাবে?
পারম্পরিক স্কলারশিপের আওতায় অনুদান পাওয়ার জন্য আপনাকে পারম্পরিক- দ্যা ট্র্যাডিশন ফাউন্ডেশনের তরফে কার্যকরী ইমেইল অ্যাড্রেস -এর মাধ্যমে আবেদন জানাতে হবে। ইমেইলের মাধ্যমে আবেদন জানানোর ক্ষেত্রে আপনাকে একটি ইমেইলে আপনার নাম, আপনার পিতার নাম, বর্তমানে আপনি কোন কোর্সে পড়াশোনা করছেন, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় আপনি কত নম্বর পেয়েছেন, বিগত পরীক্ষায় আপনি কত নম্বর পেয়েছেন, আপনার পরিবারের বাৎসরিক আয়, বর্তমানে আপনি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধীনে পড়াশোনা করছেন, কাস্ট, আপনার মোবাইল নম্বর এবং ইমেইল অ্যাড্রেস সঠিকভাবে লিখতে হবে এবং স্কলারশিপের আওতায় অনুদান পাওয়ার জন্য আবেদন জানাতে হবে। এর পাশাপাশি আপনি যে সমস্ত তথ্য উল্লেখ করেছেন সেই সমস্ত তথ্যের প্রামাণ্য নথিও উক্ত ইমেইলে অ্যাটাচ করতে হবে। ইমেইলের মাধ্যমে আবেদন জানানোর জন্য পারম্পরিক- দ্যা ট্র্যাডিশন ফাউন্ডেশনের তরফে যে ইমেইল আইডিটি কার্যকর করা হয়েছে তা হলো-
[email protected]
ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখি যে, এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদনের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন যাতে কোন রূপ তথ্যে ভুল না হয়। কোন তথ্যে ভুল রয়ে গেলে এবং ভেরিফিকেশনের সময় তা ধরা পড়লে আপনি এই স্কলারশিপের আওতায় কোনভাবেই অনুদান পাবেন না। সুতরাং সাবধানে সময় নিয়ে পারম্পরিক স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানাবেন।
পারম্পরিক স্কলারশিপের আওতায় নাম নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথি সমূহ:-
১. আবেদনকারী ছাত্র অথবা ছাত্রী বর্তমানে যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আওতায় যে কোর্সে পড়াশোনা করছেন তাতে ভর্তির প্রমাণপত্র।
২. উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মার্কশীট।
৩. আবেদনকারীর পরিচয় পত্র (আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড ইত্যাদি)।
৪. আবেদনকারী যে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা তার প্রমাণ পত্র (বিদ্যুৎ বিলের কপি/ টেলিফোন বিলের কপি)।
৫. আবেদনকারী ছাত্র অথবা ছাত্রীর পরিবারের বাৎসরিক আয়ের সার্টিফিকেট।
৬. তপশিলি জাতি, তপশিলি উপজাতি এবং ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে জাতিগত শংসাপত্র।
৭. আবেদনকারী শিক্ষার্থীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সমস্ত তথ্য।
নির্বাচনের প্রক্রিয়া:-
পারম্পরিক- দ্যা ট্র্যাডিশন ফাউন্ডেশনের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী এই স্কলারশিপের আওতায় অনুদান পাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়ে থাকেন ফাউন্ডেশনের কর্তৃপক্ষের তরফে তাদের ইন্টারভিউ নেওয়া হয়ে থাকে। যেসকল ছাত্র-ছাত্রীরা ইন্টারভিউতে উত্তীর্ণ হয়ে থাকেন সেই সকল ছাত্র-ছাত্রীদের তাদের কাস্ট, পরিবারের বাৎসরিক আয়, শারীরিক প্রতিবন্ধকতার ভিত্তিতে এই স্কলারশিপের আওতায় অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে।
আবেদনের সময়সীমা:-
ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের সুবিধা অনুসারে বছরের যেকোনো সময়ই পারম্পরিক স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানাতে পারেন।
পারম্পরিক- দ্যা ট্র্যাডিশন ফাউন্ডেশনের তরফে কার্যকরী এই স্কলারশিপটি রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রের নাগরিক থেকে শুরু করে শিক্ষা মহলের ব্যক্তিত্বদের কাছে যথেষ্ট প্রশংসিত হয়েছে। মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং সহ ব্যয়বহুল কোর্সগুলির ক্ষেত্রে এই স্কলারশিপ যে নিঃসন্দেহে যথেষ্ট সাহায্যকারী হবে তা বলাই বাহুল্য। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে রাজ্যের বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রাম্য অঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীরা ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল -এর মত প্রফেশনাল কোর্সের আওতায় শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে বারবার পিছুপা হন। পারম্পরিক স্কলারশিপ এই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের স্বপ্ন পূরণের ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়তা করবে বলেই মনে করছেন নাগরিকরা। এর পাশাপাশি স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে পাঠরত মেধাবী আর্থিকভাবে অসচ্ছল পরিবারের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এই স্কলারশিপটি যথেষ্ট সাহায্যকারী হবে বলেই মনে করছেন শিক্ষা মহলের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা।