আপনার কাছে ছেঁড়া টাকা থাকলে সেটি পাল্টাবেন কোথা থেকে? কি বলা হয়েছে RBI এর নিয়মে।
দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কাজের জন্য আমাদের টাকা প্রয়োজন হয়ে থাকে। আর এই সমস্ত কাজের সূত্র ধরেই আমাদের কাছে অনেক সময় ছেঁড়া, ফাটা টাকার নোট চলে আসে। শুধুমাত্র ১০ টাকা, ২০ টাকা কিংবা ৫০ টাকা নয়, অনেকের কাছেই ১০০ টাকা, ২০০ টাকা এমনকি ৫০০ টাকার ছেঁড়া নোটও রয়ে যায়। তবে এই সমস্ত নোট নিয়ে এখন আর চিন্তার কোন কারণ নেই, নাগরিকদের সুবিধার্থে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তরফে এক বিশেষ নির্দেশিকা প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। আর এই নির্দেশিকার মাধ্যমে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া তরফে ছেঁড়া-ফাটা নোট বদলানোর উপায় সম্পর্কে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে। সুতরাং এখন আপনারা RBI এর গাইডলাইন অনুসরণ করে অত্যন্ত সহজেই এই সমস্ত ছেঁড়া, ফাটা টাকার নোট পরিবর্তন করে নিতে পারবেন।
কি বলা হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার এই নতুন নির্দেশিকায়?
যেকোনো ভারতে নাগরিকের কাছে কোন ছেঁড়া-ফাটা নোট থাকলে উক্ত ব্যক্তি যেকোনো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে ছেঁড়া নোট বদলে নিতে পারবেন। এমনকি ছেঁড়া-ফাটা নোট বদলানোর ক্ষেত্রে ফর্ম পূরণেরও কোনরকম ঝামেলা পোহাতে হবে না। তবে শুধুমাত্র ছেঁড়া কিংবা ফাটা নোট নয়, কোনো নোটে যদি নম্বর না থাকে সেই নোটটিকেও ভারতের যেকোনো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে বদলানো সম্ভব।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার নির্দেশিকায় আরো জানানো হয়েছে যে, শুধুমাত্র ছেঁড়া-ফাটা নোট নয়, নোট পুড়ে গেলেও তা বদলানো সম্ভব। তবে নোট যদি অত্যন্ত খারাপ ভাবে পুড়ে যায় কিংবা বিকৃত হয়ে যায় তবে তা রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংক গুলির অধীনে বদলানো সম্ভব নয়, তার জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
যেকোনো ছেঁড়া কিংবা ফাটা নোটের বদলে কত টাকা ফেরত পাওয়া যাবে তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে নোটটি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার উপরে। এক্ষেত্রে যদি নোটের ৮৮ বর্গ সেন্টিমিটার ঠিক থাকে তবে সম্পূর্ণ মূল্যই ফেরত পাওয়া যাবে। নোটটির ৪৪ বর্গ সেন্টিমিটার ঠিক থাকলে অর্ধেক মূল্য ফেরত পাওয়া যাবে, এমনটাই জানানো হয়েছে রিজার্ভ ব্যাংকের তরফে প্রকাশিত এই নির্দেশিকায়।
আরও পড়ুন:- বাড়িতে সোলার প্যানেল বসিয়ে কমান ইলেকট্রিকের খরচ, সাহায্য করবে সরকার।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার এই নতুন গাইডলাইনে আরো জানানো হয়েছে যে, একজন ব্যক্তি একেবারে সর্বোচ্চ ২০ টি ছেঁড়া কিংবা ফাটা টাকার নোট বদলাতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে নোটের সর্বমোট মূল্য যেন ৫০০০ টাকার বেশি না হয়। স্বল্প মূল্যের নোট বদলের ক্ষেত্রে ব্যাংকের কাউন্টার থেকেই গ্রাহকরা টাকা ফেরত পেয়ে যাবেন। তবে বেশি মূল্যের নোট বদলের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের ব্যাংক একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করে দেওয়া হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ৫০,০০০ টাকার বেশি মূল্যের নোট বদলের ক্ষেত্রে বেশ খানিকটা সময় লাগতে পারে বলেই জানানো হয়েছে RBI -এর তরফে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গাইডলাইনে আরও জানানো হয়েছে যে, যেকোনো ব্যাংক যদি ছেঁড়া, ফাটা কিংবা পুড়ে যাওয়ার নোট বদলে দিতে অস্বীকার করে কিংবা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গাইডলাইন অমান্য করে তবে উক্ত ব্যাংককে জরিমানা করা হবে। এক্ষেত্রে কোনো ব্যাংকের কর্তৃপক্ষ যদি গ্রাহকের ছেঁড়া-ফাটা কিভাবে পুড়ে যাওয়ার নোট বদলে না দেয় তবে উক্ত গ্রাহক রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে অভিযোগ জানাতে পারবেন।
ছেঁড়া ফাটা কিংবা পুড়ে যাওয়া নোট বদলে দেওয়া হলেও কোনো রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংক থেকে কোনো প্রকার জাল নোট বদলে দেওয়া হবে না।
ছেঁড়া, ফাটা টাকার নোট নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের নানাভাবে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। দোকানে, হাটে বাজারে কিংবা ট্রেন, বাসের মতো পরিবহণের ক্ষেত্রগুলিতেও এই ছেঁড়া নোট গ্রহণ করা হয় না, যার ফলে ছেঁড়া টাকার নোটটি বাতিলের খাতায় নাম লেখায়। এই সমস্ত সমস্যা দূর করার জন্যই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তরফে এই নতুন গাইডলাইন কার্যকর করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সূত্রের তরফে প্রকাশিত রিপোর্টে জানা গিয়েছে যে, ইতিপূর্বে ছেঁড়া, ফাটা টাকার নোট নিয়ে বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী প্রতারণামূলক কাজ শুরু করেছিল যার ফলে সাধারণ নাগরিকদের বারংবার প্রতারণার শিকার হতে হচ্ছিল। গ্রাহকদের যাতে আর কোনোভাবে কোনোরকম প্রতারণার সম্মুখীন না হতে হয় তা নিশ্চিত করতেই এই গাইডলাইন কার্যকর করা হয়েছে।