পুজোর মাসে দেরিতে বেতন পাবেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। DA নিয়েও খারাপ খবর, ঘোষণা খোদ মুখ্যমন্ত্রীর
Government Employees Salary
সামনের মাসেই দুর্গোৎসব। আর তার আগে চিন্তায় মাথায় হাত পড়ল রাজ্য সরকারি কর্মীদের (Government Employees) একাংশের। এ মাসে বেতন (Salary and Employee Benefits) পেতে দেরি হবে, স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। উৎসবের সময়ে প্রতিটি মানুষের হাতে টাকার দরকার। আর সেই মাসেই বেতন নিয়ে টানাপড়েনে ফেলল রাজ্য, এই ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই হতাশ করেছে তাদের। শুধু রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেতন নয়, সেই সঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশনও দিতে বিলম্ব হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
Salary Delay in October
অক্টোবর মাসে রাজ্যের শিক্ষক ও বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মীদের বেতন ঢুকতে বিলম্ব হতে পারে বলে সম্প্রতি ঘোষণা করেছে বিহার রাজ্য। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই শিক্ষা দফতরের তরফে এক নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের শিক্ষকদের বক্তব্য অনুযায়ী, সরকারি দফতরের অসংগঠিত কাজের ফলে তাঁদের এই বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হচ্ছে।
Dearness Allowance
শুধু বেতন দেরিতেই নয়। কম বেতন পাওয়ার ও অসন্তোষ রয়েছে কর্মীদের মধ্যে। বিশেষত মহার্ঘ ভাতা (DA) নিয়ে তাঁদের অসন্তোষ প্রকাশ্যে এসেছে। শিক্ষকদের প্রাপ্ত ডিএ এর পরিমাণ কম, যার ফলে তাঁদের আর্থিক সমস্যা বাড়ছে। একদিকে যেমন বেতন পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা, অন্যদিকে ডিএ এর পরিমাণ কম থাকায় তাঁদের উদ্বেগ দিগুণ বাড়িয়েছে।
সরকারি কর্মীদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য
শিক্ষক সংগঠনগুলি ইতিমধ্যেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের কাছে আবেদন করেছে, যাতে তিনি বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন। সংগঠনগুলির দাবি, শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে বারবার নির্দেশিকা দেওয়া হলেও তা সঠিকভাবে কার্যকর করা হয়নি। এর ফলস্বরূপ শিক্ষকরা যথাসময়ে Salary এবং পেনশন (Pension) পাচ্ছেন না। এমনকি, অব্যবহৃত অর্থ শিক্ষা দফতরে জমা দেওয়ার পরেও নতুন করে বরাদ্দ অর্থ আসছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
শিক্ষা দফতরের সচিব বৈদ্যনাথ যাদব এক চিঠিতে জানিয়েছিলেন, বর্তমান কর্মরত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের তথ্য আপলোড করা হলেও, পেনশনভোগী (Pensioners) ও গেস্ট টিচারদের (Guest teacher) ক্ষেত্রে এই কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। এছাড়াও আগের অব্যবহৃত অর্থ ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত নতুন কোনও অর্থ বরাদ্দ করা হবে না বলেও জানানো হয়েছিল। এই টানাপোড়েনের ফলে উৎসবের মরশুমেও শিক্ষকরা বেতন নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হচ্ছেন।
শিক্ষক সংগঠনের নেতারা এই পরিস্থিতিতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, রাজ্য সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বের কারণে শিক্ষকরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ২০২২ এবং ২০২৩ সালেও একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, যা শিক্ষকদের মধ্যে হতাশার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে পুজোর মতো বড় উৎসবের আগে বেতন দেরিতে আসার সম্ভাবনা তাঁদের আর্থিকভাবে বিপাকে ফেলেছে।
শিক্ষকদের অভিযোগ, রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা যেখানে ৪২ শতাংশ হারে ডিএ পাচ্ছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা পাচ্ছেন মাত্র ৩৪ শতাংশ হারে। এছাড়াও, অনেক শিক্ষকের প্রাপ্য এরিয়ারও এখনও বকেয়া রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা খুবই কম, ফলে কম সংখ্যক লোকের ওপর অধিক কাজের চাপ পড়ছে। এরপরও তাঁদের বেতন এবং অন্যান্য সুবিধা নিয়ে এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে, শিক্ষকরা শিক্ষা দফতর এবং সরকারের কাছে দ্রুত সমাধানের আবেদন জানাচ্ছেন। উৎসবের সময়টা যেন তাঁদের জন্য আনন্দের হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য তাঁরা চাইছেন শিক্ষা দফতর দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করুক। আগামী দিনে এই সমস্যার সমাধান না হলে শিক্ষক মহলে প্রতিবাদের সুর আরও তীব্র হতে পারে।