মেধাশ্রী স্কলারশিপের অধীনে আবেদন জানালেই মিলবে বার্ষিক ৮০০ টাকার অনুদান।

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে রাজ্যে বসবাসকারী পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প থেকে শুরু করে স্কলারশিপ কার্যকর করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী সমস্ত স্কলারশিপগুলির তালিকায় স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ, ওয়েসিস স্কলারশিপ, নবান্ন স্কলারশিপ, ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ সহ একাধিক স্কলারশিপের নাম রয়েছে, আর এবারে রাজ্য সরকারের তরফা কার্যকরী এই সমস্ত স্কলারশিপের তালিকায় আরো এক নতুন স্কলারশিপের নাম যুক্ত করা হলো রাজ্য সরকারের তরফে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ উদ্যোগে কার্যকরী এই স্কলারশিপটি সমগ্র রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের কাছে মেধাশ্রী স্কলারশিপ নামে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছে।

মেধাশ্রী স্কলারশিপ কি?

মেধাশ্রী স্কলারশিপ মূলত পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী এমন এক বিশেষ স্কলারশিপ, যার মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে উৎসাহ প্রদানের জন্য অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে।

মেধাশ্রী স্কলারশিপের অধীনে ছাত্র-ছাত্রীরা কত টাকার অনুদান পেয়ে থাকেন?

রাজ্য সরকারের তরফে জারি করা তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী মেধাশী স্কলারশিপের আওতাভুক্ত ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিবছরে ৮০০ টাকার অনুদান পেয়ে থাকেন। রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের ২ লক্ষ ৬৩ হাজার পড়ুয়া মেধাশ্রী স্কলারশিপের আওতায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। অর্থাৎ আগামীদিনে রাজ্যে বসবাসকারী ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত ২ লক্ষ ৬৩ হাজার পড়ুয়া মেধাশ্রী স্কলারশিপের মাধ্যমে বার্ষিক ৮০০ টাকার অনুদান পেয়ে যাবেন।

আরও পড়ুন:- প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় আবেদন করুন এবং পেয়ে যান ১,২০,০০০ টাকার অনুদান।

মেধাশ্রী স্কলারশিপের আওতায় আবেদনের ক্ষেত্রে আবশ্যক যোগ্যতা:-

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ীভাবে বসবাসকারী ছাত্র-ছাত্রীরা কেবলমাত্র এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন। তবে শুধুমাত্র ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত ছাত্র-ছাত্রীরাই এই স্কলারশিপের অধীনে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। এর পাশাপাশি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে স্বীকৃত যেকোনো বোর্ডের অধীনস্থ যেকোনো বিদ্যালয়ের আওতায় পঞ্চম শ্রেণী থেকে শুরু করে অষ্টম শ্রেণীতে পাঠরত ছাত্র-ছাত্রীরা মেধাশ্রী স্কলারশিপের অধীনে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। যদিও এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত ছাত্র-ছাত্রীরাই মেধাশ্রী স্কলারশিপের অধীনে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন।

একজন ছাত্র অথবা ছাত্রী একই ক্লাসে মেধাশ্রী স্কলারশিপের আওতায় ২ বার অনুদান পাবেন না। অর্থাৎ আবেদনকারী শিক্ষার্থী যদি কোনো ক্লাসে ফেল করেন তবে তিনি স্কলারশিপের আওতায় অনুদান পাবেন না। এর পাশাপাশি আবেদনকারী ছাত্র অথবা ছাত্রী পরিবারের বাৎসরিক আয় ২.৫ লক্ষ টাকার তুলনায় কম হতে হবে, তবেই তিনি রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী স্কলারশিপের আওতায় নিজের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা রাজ্য সরকারের আওতাধীন অন্য কোনো সরকারি স্কলারশিপের আওতায় বা কোনো বেসরকারি স্কলারশিপের অধীনে অনুদান পেয়ে থাকেন তারা কোনভাবেই এই স্কলারশিপের অধীনে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন না। ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার্থে আরও জানিয়ে রাখি, রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, মেধাশ্রী স্কলারশিপের আওতায় নিজের নাম নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে আবেদনকারী ছাত্রীর নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা আবশ্যক।

আবেদনের প্রক্রিয়া:-

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পের মাধ্যমে মেধাশ্রী প্রকল্পের অধীনে ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ির নিকটবর্তী দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প থেকে মেধাশ্রী প্রকল্পের আওতায় আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ফর্মটি সংগ্রহ করতে হবে এবং তা নির্ভুলভাবে পূরণ করতে হবে। এরপর ফর্মে উল্লিখিত সমস্ত তথ্য অ্যাটাচ করে পুনরায় ফর্মটি দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে জমা করলে মেধাশ্রী প্রকল্পের আওতায় অবদানের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে। এছাড়াও কোনো ছাত্র বা ছাত্রী বর্তমানে যে স্কুলের আওতায় পড়াশোনা করছেন উক্ত স্কুলের কর্তৃপক্ষের সাহায্যেও এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানানো যাবে।

আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথিপত্র:-

১. আবেদনকারী শিক্ষার্থী কিংবা তার পিতা-মাতার ওবিসি সার্টিফিকেট।
২. আবেদনকারী ছাত্র অথবা ছাত্রীর বিগত পরীক্ষার মার্কশিট।
৩. আবেদনকারী শিক্ষার্থী যে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা তার প্রমাণপত্র।
৪. আবেদনকারীর পরিবারের বার্ষিক আয়ের সার্টিফিকেট।
৫. আবেদনকারী শিক্ষার্থীর আধার কার্ড।
৬. উক্ত ছাত্র বা ছাত্রীর সদ্যতোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
৭. আবেদনকারী শিক্ষার্থীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের পাস বইয়ের প্রথম পৃষ্ঠার জেরক্স কপি।

Related Articles

Back to top button