শিক্ষকের জন্য জারি হলো নতুন নিয়ম। না মানলেই খোয়া যাবে চাকরি।

চাকরি পেয়েও শান্তি নেই, চাকরি হারানোর ভয়ে কাঁটা হয়ে রয়েছেন এই রাজ্যের শিক্ষকরা। সমগ্র রাজ্যের বহু সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষক হওয়ার আশায় নিজেদের প্রস্তুত করে থাকেন। শিক্ষক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য টিচার ট্রেনিং কোর্স থেকে শুরু করে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়, তবে এখন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও শান্তি নেই। শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় পাশ করার পরেও শিক্ষকদের চাকরি থাকবে কিনা তা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্ন উঠছে সমগ্র রাজ্যব্যাপী শিক্ষকদের মধ্যে। আজ্ঞে হ্যাঁ, শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় পাশ করে চাকরি পেয়েও চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিহারের রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী এক নতুন নিয়মে।

বিহারের রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, শিক্ষা দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব কে কে পাঠক এক বিশেষ নির্দেশিকা জারি করে সমগ্র রাজ্যে শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে জানিয়েছেন, বর্তমানে শিক্ষকরা যে স্কুলে কর্মরত সেই স্কুলের ১৫ কিলোমিটারের মধ্যেই সমস্ত ধরনের কাজ সম্পন্ন করতে হবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। এর পাশাপাশি আরো জানানো হয়েছে যে, কোনো কারণে যদি শিক্ষকরা স্কুলের ১৫ কিলোমিটারের বাইরে গিয়ে থাকেন তবে তাদের চাকরি খোয়াতে হবে। বিভিন্ন বিশ্বস্ত সূত্রের তরফে প্রকাশিত খবরে জানানো হয়েছে যে, BPSC-এর মাধ্যমে বহু সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীকে নব শিক্ষক রূপে নির্বাচন করা হয়েছে এবং তাদের গ্রামের স্কুলে নিয়োগ করা হয়েছে। তাই সমস্ত নতুন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে গ্রামের স্কুলের ১৫ কিলোমিটার -এর মধ্যেই থাকার নিদান দিয়েছেন শিক্ষা দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব কে কে পাঠক নতুবা তারা চাকরি খোয়াবেন বলেই জানিয়েছেন তিনি।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গিয়েছে যে, বৃহস্পতিবার বক্সার জেলা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন এসিএস কেকে পাঠক। এদিন জেলা পরিদর্শনের পাশাপাশি ডুমরার শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (DIET)-তেও গিয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে বিহার পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচিত ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ চলছে ডুমরার শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট -এ, আর তাতেই তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের হাল হকিকত জানতে উক্ত প্রতিষ্ঠানে গিয়েছিলেন। আর গত বৃহস্পতিবারই সেখানে নব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্দেশ্যে এই কঠোর নিয়ম জারি করেন তিনি। এই দিন কে কে পাঠক জানান যে, গ্রামের বিদ্যালয়ের উন্নয়নের স্বার্থেই সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকাকে নিয়োগ করা হয়েছে। সুতরাং নব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গ্রামের যে স্কুলে পোস্টিং দেওয়া হবে তার ১৫ কিলোমিটার -এর মধ্যেই তাদের থাকা বাধ্যতামূলক, কোনোভাবে উক্ত স্কুলের ১৫ কিলোমিটারের সীমারেখার বাইরে গেলেই চাকরি খোয়াতে হবে শিক্ষকদের।

তবে শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি তিনি এদিন আরো জানিয়েছেন যে, যে সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকারা গ্রামে থাকতে চান না তারা নিজেদের জন্য বিকল্প রাস্তা খুঁজে নিতে পারেন। তবে এদিন কে কে পাঠক শুধুমাত্র কঠোর নিয়ম জারি করেছেন তা নয় হবু শিক্ষক-শিক্ষিকাদের খোঁজও নিয়েছেন। এছাড়াও রাঁধুনীর সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের রান্নাঘরও ঘুরে দেখেছেন। নাগরিকদের একাংশের মতে, গ্রামের স্কুলগুলির ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাক্ষেত্রে যাতে কোনোরকম সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয় তার জন্যই এমন বিধান জারি করেছেন বিহার শিক্ষা দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব কে কে পাঠক। আবার অনেকেই মনে করছেন বিহার শিক্ষা দপ্তরের মুখ্য সচিব কে কে পাঠক নতুন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য অতিরিক্ত কঠোর নিয়ম জারি করেছেন, ফলত বিহারের শিক্ষা দপ্তরের তরফে কার্যকরী এই নতুন নিয়ম নিয়ে যথেষ্ট চর্চাও হচ্ছে।

Related Articles

Back to top button