আবেদন করুন গীতাঞ্জলি প্রকল্পে এবং পেয়ে যান সর্বাধিক ৭৫,০০০ টাকার অনুদান।
সমগ্র ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে এমন প্রচুর মানুষ বসবাস করেন যাদের নিজস্ব বাড়ি নেই, আর এই সমস্ত মানুষদের পাকাগৃহ বা সুরক্ষিত আবাসস্থল প্রদানের খাতিরে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফে গীতাঞ্জলি প্রকল্প কার্যকর করা হয়েছে। রাজ্যের দরিদ্র, অসহায় মানুষদের পাকাবাড়ি এবং সুরক্ষিত আশ্রয়স্থল প্রদানের জন্য কার্যকরী এই বিশেষ প্রকল্পটি গীতাঞ্জলি প্রকল্প বা বাংলার বাড়ি প্রকল্প নামে বিশেষ পরিচিত। রাজ্যের প্রতিটি মানুষকে সুরক্ষিত আবাসস্থল প্রদান করাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে কার্যকরী এই বিশেষ প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
এই প্রকল্পের আওতায় কি কি সুবিধা পাওয়া যায়?
১. গীতাঞ্জলি প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের বসবাসকারী অসহায় আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর মানুষদের পাকাবাড়ি তৈরির অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে।
২. বন্যা, ঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে যে সমস্ত মানুষ তাদের আবাসস্থল হারিয়েছে তাদের পুনর্বাসন দেওয়ার উদ্দেশ্যেও রাজ্য সরকারের তরফে এই প্রকল্পটি কার্যকর করা হয়েছে। অর্থাৎ যে সমস্ত সাধারণ জনগণ বন্যা, ঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে তাদের বাড়ি হারিয়েছেন তারাও এই প্রকল্পের মাধ্যমে পাকাবাড়ি তৈরির অনুদান পাবেন।
৩. শুধুমাত্র প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী নাগরিকরাই নয়, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন শহর অঞ্চলে বসবাসকারী গৃহহীন নাগরিক এমনকি পাহাড়, সুন্দরবনের মতো দুর্গম অঞ্চলে বসবাসকারী সাধারণ মানুষও এই প্রকল্পের আওতায় বাড়ি তৈরির অনুদান পাবেন।
গীতাঞ্জলি প্রকল্পের আওতায় আবেদনের ক্ষেত্রে আবশ্যিক যোগ্যতা কি কি?
১. রাজ্য সরকারের তরফে জারি করা তথ্য অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী দরিদ্র, দুঃস্থ, আর্থিকভাবে অসহায় শ্রেণীর গৃহহীন সাধারণ জনগণ এই প্রকল্পের আওতায় অনুদান পাবেন।
২. যে সমস্ত সাধারণ জনগণের নিজস্ব জমি রয়েছে কিন্তু পাকা বাড়ি নেই তারাই কেবলমাত্র এই প্রকল্পের আওতায় অনুদান পাবেন।
৩. যে সমস্ত নাগরিকদের জমি নিয়ে কোনরূপ আইনি জটিলতা নেই তারাই কেবলমাত্র গীতাঞ্জলি প্রকল্পের আওতায় পাকাবাড়ি তৈরির অনুদানের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন।
৪. রাজ্যে বসবাসকারী যে সমস্ত পরিবারের মাসিক পারিবারিক আয় ৬০০০ টাকা বা তার তুলনায় কম তারাই কেবলমাত্র গীতাঞ্জলি প্রকল্পের আওতায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন।
আরও পড়ুন:- ৬০০ কোটিতে মহাকাশ অভিযান, বিশ্বের দরবারে নয়া রেকর্ড গড়তে চলেছে ভারত।
গীতাঞ্জলি প্রকল্পের আওতায় কত টাকার অনুদান পাওয়া যায়?
রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, গীতাঞ্জলি প্রকল্পের আওতাভুক্ত ব্যক্তিদের পাকাবাড়ি নির্মাণের জন্য মূলত ৭০ হাজার টাকার অনুদান দেওয়া হয়ে থাকে। তবে যে সমস্ত ব্যক্তিরা পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাস করছেন এবং সুন্দরবনের মতো দুর্গম অঞ্চলে বসবাস করছেন তাদের গীতাঞ্জলি প্রকল্পের আওতায় বাড়ি নির্মাণের খাতিরে ৭৫,০০০ টাকার অনুদান দেওয়া হয়ে থাকে।
গীতাঞ্জলি প্রকল্পের আওতায় কিভাবে নিজের নাম নথিভুক্ত করা সম্ভব?
গীতাঞ্জলি প্রকল্পের আওতায় নিজের নাম নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে আপনাকে মহকুমা শাসকের অফিসে বা SDO অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এছাড়াও আপনি আপনার ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকের অফিসে বা BDO অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার মাধ্যমেও গীতাঞ্জলি প্রকল্পের আওতায় নিজের নাম নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারবেন। রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, গীতাঞ্জলি প্রকল্প সংক্রান্ত সমস্ত প্রক্রিয়া যাতে সঠিকভাবে সম্পন্ন হয় তা নিশ্চিত করার জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একজন জেলা শাসক এবং একজন অতিরিক্ত জেলাশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। জেলাশাসকের নেতৃত্বাধীন কমিটি আবেদনকারীর আবেদনপত্র সহ অন্যান্য সমস্ত প্রকার তথ্য এবং নথি খতিয়ে দেখে, তারপরেই এই প্রকল্পের আওতায় বাড়ি নির্মাণের অনুদান প্রদান করে থাকেন।
রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বসবাসকারী সাধারণ জনগণের মাথার উপর ছাদ না থাকার কারণে তাদের বারংবার বিভিন্নভাবে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এমনকি ঝড়, বন্যা, অতি বৃষ্টি, খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলিতে এই সমস্ত সাধারণ জনগণের ভোগান্তির শেষ থাকে না। আর এই সমস্ত সাধারণ মানুষকে পাকাবাড়ি অর্থাৎ একটি সুরক্ষিত আশ্রয়স্থল প্রদানের উদ্দেশ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে গীতাঞ্জলি প্রকল্প বা বাংলার বাড়ি প্রকল্প কার্যকর করা হয়েছে। শুরুর দিকে গীতাঞ্জলি প্রকল্পের আওতায় বিধায়কদের সুপারিশের খাতিরে পাকা বাড়ি প্রদান করা হতো, তবে পরবর্তীতে এই নিয়মে পরিবর্তন এনে ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসের মাধ্যমেই গীতাঞ্জলি প্রকল্প বা বাংলার বাড়ি প্রকল্পের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া কার্যকর করা হয়েছে।