Leave Rules – পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের ছুটি নিয়ে নয়া নির্দেশ। কি কি পরিবর্তন হলো জেনে নিন
West Bengal State Govt Employee Leave Rules
পশ্চিমবঙ্গে DA কম পাওয়ার অভিযোগ থাকলেও ছুটি বা Leave Rules অনেকটাই কর্মীদের অনুকুলে বলে মনে করেন, ক্ষোদ রাজ্য সরকারি কর্মীরা। তবে এবার থেকে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা জারি করছে নবান্ন। আর যখন তখন যা তা কারণে ছুটি নিয়ে কাজে ফাঁকি মারার দিন শেষ। ছুটির পরিমাণ কমিয়ে আরো বেশি করে কাজে মনোযোগ দিতে হবে তাদের, একথা স্পষ্ট জানানো হয়েছে। সরকারি পরিষেবা (Public Service) পেতে সাধারণ মানুষের যাতে কোন অসুবিধা না হয় এবং সময়মতো তা পেতে পারেন সেটি নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে খবর নবান্ন সূত্রে।
West Bengal Employees Leave Rules
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সাম্প্রতিক কাণ্ডকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার ক্ষোভ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের শীর্ষ নেতারা তৎপর হয়েছেন। তাঁরা মনে করছেন, সাধারণ মানুষের অসন্তোষ শুধুমাত্র আরজি করের ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় নয়, বরং এর সঙ্গে প্রশাসনিক স্তরে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা অসন্তোষও মিশে গেছে। এই অসন্তোষের আগুন নিভিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা পুনরুদ্ধার করাই সরকারের এখন প্রধান লক্ষ্য।
সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) দ্রুত পদক্ষেপ গ্ৰহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
নবান্ন সূত্রে খবর, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগে বড়সড় রদবদল করতে পারেন। এর আগে শনিবার নবান্ন থেকে ছুটি সংক্রান্ত তথা Leave Rules নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়, যেখানে সরকারি কাজের গতি বাড়ানোর ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পরিকাঠামো উন্নয়ন ও নাগরিক পরিষেবার কাজ দ্রুত এবং সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হবে। সরকারি কর্মচারীদের অনুপস্থিতি বা কাজে ফাঁকি দেওয়াকে কোনওভাবেই সহ্য করা হবে না। এই ধরনের আচরণকে সরকারি চাকরির (Government Service) নিয়মের লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে কাজের গতি শ্লথ হয়ে গেছে। লোকসভা ভোট এবং বিভিন্ন জেলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সরকারি প্রকল্পগুলির কাজ সঠিকভাবে এগোতে পারেনি। চার মাসের এই স্তব্ধতা কাটিয়ে পুনরায় কাজের গতি ফেরানো এখন জরুরি। সরকারি কর্মচারীদের (Government Employees) আরও সক্রিয় ও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এই বিজ্ঞপ্তিতে (Leave Rules Notification) পরিকাঠামো নির্মাণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রামীণ কর্মসংস্থান, পানীয় জল সরবরাহের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলির উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারি আর্থিক সুবিধাগুলি যাতে প্রান্তিক মানুষের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছে যায়, তা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে। সব অফিসার ও কর্মচারীদের কাজে আরও সুশৃঙ্খল হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং সবার মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, সার্ভিস রুলের (Employee Benefits Service Rules) নিয়মকানুন মেনে চলা আবশ্যক।
সরকারি মহল মনে করছে, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনা সরকারের সঙ্গে সাধারণ মানুষের একটি বিচ্ছিন্নতা তৈরি করেছে। এই বিচ্ছিন্নতা কাটিয়ে ওঠা জরুরি, এবং এজন্য প্রশাসনিক স্তরে কড়া নজরদারি প্রয়োজন। সরকারের শীর্ষ মহল বিশ্বাস করে, প্রশাসন ও পুলিশের কাজের মান যদি উন্নত করা যায়, তাহলে মানুষ ধীরে ধীরে সরকারের ওপর আস্থা ফিরে পাবে।
বিজ্ঞপ্তির পর সরকারি কর্মচারীদের একাংশের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তাঁদের অনেকেরই ধারণা, আরজি কর আন্দোলন যেন আরও বড় আকার না নেয়, সে জন্যই কর্মচারীদের কাজে সক্রিয় থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে নবান্নের কর্মকর্তারা এই যুক্তি উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, এর পিছনে উদ্দেশ্য আরও গভীর। পরিষেবা উন্নয়নের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক মজবুত করাই এই নির্দেশিকার মূল লক্ষ্য।