পশ্চিমবঙ্গে ডিএ না পেলেও রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য অর্থ দপ্তরের জরুরী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত

West Bengal Finance Department

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের (Government Employees) জন্য বছরের শেষ সপ্তাহে জরুরী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলো। আর এই নির্দেশ দেখে অনেকেরই রাতের ঘুম উড়ে যেতে চলেছে এমনটাই মনে করা হচ্ছে। একদিকে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বৃদ্ধি করছে না পশ্চিমবঙ্গ সরকার (Government of West Bengal). এখনো পর্যন্ত ডিএ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court of India) মামলা বিচারাধীন রয়েছে। আর এর মধ্যে এই বিজ্ঞপ্তিতে কার্যত দিশেহারা রাজ্যের কর্মীদের একাংশ।

West Bengal Government Employees official order

কেন্দ্র সরকার ও অন্যান্য রাজ্য সরকার সরকারি কর্মচারীদের জন্য ডিএ বৃদ্ধি করলেও, বাংলার সরকারি কর্মচারীরা এখনো পর্যন্ত ন্যূনতম ১৪ শতাংশ হারে ডিএ (Dearness Allowance) পাচ্ছেন। এর ফলে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের ক্ষোভ ধীরে ধীরে আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে (Employee Benefits). এই অবস্থাতেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ওপর আরো নতুন কিছু নিয়ম চাপিয়ে দেওয়া হল। কি সেই নিয়ম?

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মী

সম্প্রতি নবান্ন থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ পেয়েছে, উল্লেখিত রয়েছে প্রশাসনিক ব্যবস্থার নতুন করে সংস্কার করা হবে। এই জন্য ইতিমধ্যেই বড় ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, এই সংক্রান্তই রিপোর্ট প্রকাশ পেয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, সরকারি অফিসারদের জন্য নতুন এক মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন আনা হচ্ছে নবান্নর তরফে। এই নতুন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন কি কাজ করবে?

WBIFMS Mobile App for Government Employees

এই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মূল লক্ষ্য হলো, সরকারি অর্থের যথাযথ প্রয়োগ। সরকারি অর্থের যাতে অপচয় বন্ধ হয়, সেই সাথে সরকারি অর্থ কোন কোন খাতে কিভাবে খরচ হচ্ছে, তার জন্য সুষ্ঠুভাবে মনিটরিং করার জন্য এই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনটি তৈরি করা হয়েছে। এই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনটির সম্পূর্ণ নাম হলো ফিল্ড ইনস্পেকশন মনিটরিং অ্যান্ড সুপারভিশন মোবাইল অ্যাপ।

West Bengal Finance Department Order

অনেক সময় দেখা গিয়েছে, সরকারি বিভিন্ন কার্যালয় মেরামতের বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য টাকা খরচ করার নাম করে সেই টাকা সঠিক জায়গায় খরচ করা হয়নি, এমনই কারচুপির অভিযোগ উঠেছে অনেক দিন ধরে। এমনও হয়েছে, যে জায়গায় কোন রকম মেরামতের দরকার নেই তেমন জায়গাতেও মেরামতের নাম করে টাকা খরচ করা হয়েছে এবং সেই টাকা খরচের হিসেব খাতা কলমে লিখেও রাখা হয়েছে নির্দিষ্ট কোন কাজের নাম উল্লেখ করে।

অথচ সেই রকম কোন কাজ প্রকৃত অর্থে সরকারের ক্ষেত্রে করা হয়নি। এইভাবে বহুদিন ধরে সরকারি অর্থ তছনছের অভিযোগ উঠেছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের তরফে। মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন পদ্ধতির মাধ্যমে এইবার থেকে সরকারি ক্ষেত্রে কোন মেরামতি বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য টাকা খরচ করার আগে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে জিপিএস ট্যাগ করে মহকুমা শাসককে দেখাতে হবে, সেই সাথে ছবিও পাঠাতে হবে।

মহকুমা শাসক যদি মনে করেন, সেই জায়গায় মেরামতের প্রয়োজন রয়েছে, তাহলে সরকারি অর্থ বরাদ্দ করা হবে, আর যদি মনে করা হয় মেরামতে প্রয়োজন নেই, তাহলে কোন অর্থ বরাদ্দ করা হবে না। জানা যাচ্ছে, একবারে নিচুতলার অফিসার থেকে জেলা শাসক সকলেই এই অ্যাপের সাথে সংযুক্ত থাকবে। যে কোন সরকারি ক্ষেত্রে কাজ করার আগে এই অ্যাপের মাধ্যমেই তথ্য আপলোড করতে হবে এবং তার সাথে ছবিও আপলোড করতে হবে।

এরপর সেই তথ্য এবং ছবি মহকুমা শাসকের কাছে পাঠাতে হবে। মহকুমা শাসক সেই তথ্য এবং ছবি দেখে সমীক্ষা করে রিপোর্ট প্রকাশ করবে। এরপর সেই রিপোর্ট পাঠানো হবে জেলা শাসকের কাছে। এছাড়া সরকারি ক্ষেত্রে যখন কোন কাজ করা হবে সেই সময় ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার ফিল্ডে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে কিনা সেটাও GPS ম্যাপিং করা হবে। এই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন সিস্টেম চালু করার ফলে সরকারি অর্থ কারচুপি অনেকটাই ঠেকানো যাবে, সেই সাথে সরকারি অফিসাররা অনেকটাই চাপের মধ্যে থাকবেন।

বড়দিনে সরকারি কর্মীদের ডিএ ও পে কমিশন নিয়ে বড় ঘোষণা। পহেলা জানুয়ারি থেকে কার্যকর

রাজ্যের অর্থ দপ্তরের তরফে অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে আসা তথ্য যাচাই করার জন্য অর্থ দপ্তরের তরফে আধিকারিককে নিয়ে একটি সেল গঠন করা হবে। ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করে বিভিন্ন দফতরকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আট আধিকারিকের সেলে রয়েছেন দফতরের বিশেষ সচিব, সচিবরা, মূলত ওএসডি পদে কর্মরত। রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি কর্মস্থল গুলিতে সরকারি কাজের অগ্রগতি কেমন হচ্ছে এবং সে বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

নববর্ষের আগে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত। ডিএ বাড়ছে কত শতাংশ? বকেয়া নিয়ে কি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

সেই সমস্ত তথ্যই অ্যাপ্লিকেশন অ্যাপের মাধ্যমে নবান্নে পৌছাবে। এই সমস্ত কাজ তদারকি ও পর্যালোচনা করার জন্যই ৮ জন আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন, সরকারি যে কোন কাজ যাতে ভালো ভাবে সম্পন্ন হয় এবং জনগণের যাতে সুযোগ সুবিধা গুলি সঠিকভাবে পর্যালোচনা করা হয়। এই সুবিধা চালু হলে রাজ্য সরকারি কর্মীদের অনেকটাই লাভ হবে বলে মনে করছেন অনেকে।

Related Articles

Back to top button