পোস্ট অফিস নাকি ব্যাংক কোন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করলে অধিক লাভবান হবেন, জেনে নিন।
ভারতীয় ডাক বিভাগ এবং সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রকার ব্যাংকের অধীনে সমগ্র ভারতের প্রচুর সংখ্যক মানুষের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। অধিকাংশ মানুষই বেশ কিছু টাকা সঞ্চয়ের লক্ষ্যে নানাবিধ সঞ্চয় প্রকল্পের অধীনে বিনিয়োগ করে থাকেন। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০২৩ ত্রৈমাসিকের জন্য সুদের হার বৃদ্ধি করা হলে পোস্ট অফিস নাকি সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক কোন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ অধিক লাভজনক তা নিয়ে ভারতের সাধারণ মানুষের মধ্যে যথেষ্ট আলাপ আলোচনার সূত্রপাত ঘটেছে। আর তাই আজকের এই পোস্টে পোস্ট অফিসের আওতায় বিনিয়োগ বেশি সুবিধাজনক নাকি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের আওতায় বিনিয়োগ বিশেষ সুবিধাজনক তা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আলোচনা করা হবে।
চলুন তবে পোস্ট অফিস রেকারিং ডিপোজিট -এর অধীনে কত হারে সুদ পাওয়া যাবে তা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক:-
মূলত পোস্ট অফিস রেকারিং ডিপোজিট -এর আওতায় পাঁচ বছরের জন্য বিনিয়োগ করা সম্ভব। এক্ষেত্রে আপনি যখন বিনিয়োগ করবেন সেই সময় যে হারে সুদ প্রদান করা হবে, টাকা তোলার সময়ও একই হারে সুদ প্রদান করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০২৩ ত্রৈমাসিকের জন্য পোস্ট অফিস রেকারিং ডিপোজিট স্কিমের সুদের হার ৩০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে, যার ফলে বর্তমানে সুদের হার বৃদ্ধি পেয়ে ৬.৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের অধীনস্ত রেকারিং ডিপোজিটে কত হারে সুদ পাওয়া যাবে?
বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের অধীনস্ত কারেন্ট ডিপোজিটে কত হারে সুদ পাওয়া যাবে তা উক্ত ব্যাংকের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তন করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে নানাবিধ সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের আওতাধীন রেকারিং অ্যাকাউন্টে যে হারে সুদ প্রদান করা হয়ে থাকে তা হল:
১. স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার রেকারিং ডিপোজিটর সুদের হার:
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ১ বছর থেকে ২ বছরের কম মেয়াদের রেকারিং ডিপোজিটের ক্ষেত্রে ৫.১০ % হারে সুদ প্রদান করা হয়ে থাকে। ২ বছর থেকে ৩ বছরের কম মেয়াদের রেকারিং ডিপোজিটের ক্ষেত্রে ৫.২০% হারে সুদ প্রদান করা হয়ে থাকে। ৩ বছর থেকে ৫ বছরের কম মেয়াদের রেকারিং ডিপোজিট -এর ক্ষেত্রে ৫.৪৫ শতাংশ সুদ প্রদান করা হয়ে থাকে। ৫ বছর এবং ১০ বছরের মতো দীর্ঘমেয়াদী রেকারিং ডিপোজিটের ক্ষেত্রে ৫.৫০ শতাংশ হারে সুদ প্রদান করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্র স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কর্তৃপক্ষের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, ন্যূনতম ১২ মাসের জন্য এবং সর্বোচ্চ ১২০ মাসের জন্য বিনিয়োগ করা সম্ভব।
আরও পড়ুন:- উৎক্ষেপণের পর চন্দ্রযান ৩ কতদূর পৌঁছেছে, জেনে নিন।
২. ICICI ব্যাংকের রেকারিং ডিপোজিটের সুদের হার:
ICICI ব্যাংকের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, নিয়মিত নাগরিকদের জন্য আইসিআইসিআই ব্যাংকের তরফে ৪.৭৫ শতাংশ থেকে শুরু করে ৭.১০ শতাংশ হারে সুদ প্রদান করা হয়ে থাকে। অন্যদিকে বয়সপ্রাপ্ত নাগরিকদের আইসিআইসিআই ব্যাংকের তরফে ৫.২৫ শতাংশ থেকে শুরু করে ৭.৫০ শতাংশ হারে সুদ প্রদান করা হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি আরো জানা গিয়েছে যে, বিগত ২৪ শে ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ থেকে আইসিআইসিআই ব্যাংকের তরফে এই নতুন সুদের হার কার্যকর করা হয়েছে।
৩. HDFC ব্যাংকের রেকারিং ডিপোজিটের সুদের হার:
এইচডিএফসি ব্যাংকে ৬ মাস মেয়াদের রেকারিং ডিপজিটে ৪.৫০ শতাংশের মধ্যে সুদ প্রদান করা হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি এইচডিএফসি ব্যাংকের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, ৯ মাস, ১২ মাস এবং ১৫ মাস মেয়াদের রেকর্ডিং ডিপোজিটের জন্য এইচডিএফসি ব্যাংকের তরফে যথাক্রমে ৫.৭৫ শতাংশ, ৬ শতাংশ এবং ৭.১০ শতাংশ হারে সুদ প্রদান করা হয়ে থাকে। অন্যদিকে, ২৪ মাস, ২৭ মাস, ৩৬ মাস, ৩৯ মাস আর ৪৮ মাস, ৬০ মাস, ৯০ মাস এবং ১২০ মাস মেয়াদের রেকারিং ডিপোজিটের ক্ষেত্রে ৭% হারে সুদ প্রদান করা হয়ে থাকে।
৪. ইয়েস ব্যাঙ্কের রেকারিং ডিপোজিটের সুদের হার:
ইয়েস ব্যাঙ্কের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, ৬ মাস থেকে ৫ বছর পর তার বেশি মেয়াদের রেকারিং ডিপোজিট -এর ক্ষেত্রে ৬.১০ শতাংশ থেকে শুরু করে ৭ শতাংশ হারে সুদ প্রদান করা হয়ে থাকে। যদিও এক্ষেত্রে রেকারিং ডিপোজিটের আওতায় ৩ মাসের একাধিক মেয়াদে বুক করা সম্ভব, তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কিস্তি দিতে না পারলে ১ শতাংশ হারে পেনাল্টি চার্জ করা হয়ে থাকে।