পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আরও একটি নতুন ছুটি ঘোষণা। কবে ছুটি, কাদের ছুটি, কাদের ছুটি নয়?

By-Election Holiday

পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্য সরকারি কর্মী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের জন্য জুন মাসেই নতুন ছুটি ঘোষণা। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের অর্থ দপ্তর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, যেখানে আগামী ১৯শে জুন, ২০২৫ তারিখে কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন উপলক্ষে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এই ছুটি সবার জন্য নয়, বরং নির্দিষ্ট এলাকা ও প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য। এই প্রতিবেদনে আমরা এই ছুটির বিস্তারিত তথ্য, কবে ছুটি, কাদের ছুটি, কারা এই ছুটি পাবেন না এবং এর সাথে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি সহজ ভাষায় আলোচনা করব।

📅 পশ্চিমবঙ্গে নতুন ছুটি ঘোষণা ও তারিখ

পশ্চিমবঙ্গ সরকার নির্বাচন কমিশনের প্রেস নোট নং (ECI/PN/220/2025, তারিখ ২৫শে মে, ২০২৫) অনুসারে ১৯শে জুন, ২০২৫ (বৃহস্পতিবার) কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের জন্য (By-Election Holiday) ছুটি ঘোষণা করেছে। এই ছুটি Negotiable Instruments Act, 1881-এর 25 নং ধারার অধীনে ঘোষিত হয়েছে। এটি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট এলাকার প্রতিষ্ঠান ও কর্মীদের জন্য প্রযোজ্য হবে, যা নির্বাচনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।

✅ কারা এই ছুটি পাবেন?

এই ছুটি কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত এলাকার নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য। এই প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • সরকারি অফিস: রাজ্য সরকারের অধীনস্থ সমস্ত সরকারি অফিস এই ছুটির আওতায় থাকবে।
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: স্কুল, কলেজ এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা কালীগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত।
  • সংবিধিবদ্ধ ও স্থানীয় সংস্থা: সরকারি কর্পোরেশন, বোর্ড এবং অন্যান্য স্থানীয় সংস্থাগুলিও এই ছুটি পাবে।

এই ছুটি শুধুমাত্র কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য। তাই, অন্যান্য এলাকার বাসিন্দা বা প্রতিষ্ঠান এই ছুটির সুবিধা পাবে না। তবে অন্যান্য এলাকায় কর্মরত কর্মী যদি কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ভোটার হয়ে থাকেন, তবে By-Election এ ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য তিনি এই ছুটি পাবেন।

আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মী ও শিক্ষকদের ছুটি বাতিলের নির্দেশিকা। বেতনের টাকা ও কম ঢুকছে।

বেসরকারি সংস্থার জন্য নির্দেশিকা 🏭

শ্রম দফতর বেসরকারি সংস্থাগুলির জন্যও বিশেষ নির্দেশিকা জারি করবে। এর মধ্যে দোকান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং চা বাগান প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা নির্বাচনের দিন সবেতন ছুটি পাবেন এবং তাঁরা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন। সুতরাং উক্ত এলাকার সরকারি বেসরকারি সমস্ত কর্মীদের জন্যই ভোট দেওয়ার জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন স্মার্ট মিটারে বিদ্যুৎ বিল বেশি উঠছে, বাতিলের দাবিতে আন্দোলন। স্মার্ট মিটার লাগানো কি বাধ্যতামূলক?

🗳 অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ⭐

এই ছুটির সঙ্গে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জড়িত রয়েছে, যা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আরও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ:

কালীগঞ্জের বাইরে কর্মরত ভোটারদের জন্য ছুটি:

যেসব ভোটার কালীগঞ্জের স্থায়ী বাসিন্দা এবং ভোটার তালিকায় নথিভুক্ত, কিন্তু অন্য এলাকায় শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, তাঁরাও ১৯শে জুন সবেতন ছুটি পাবেন। এই সুবিধা ঠিকা শ্রমিকদের জন্যও প্রযোজ্য এবং এটি Representation of the People Act, 1951-এর ১৩৫বি(১) ধারা অনুযায়ী প্রদান করা হবে।

পুনর্নির্বাচনের ক্ষেত্রে ছুটি:
যদি কোনও কারণে পুনর্নির্বাচনের প্রয়োজন হয়, তবে কর্মীরা একইভাবে ভোট দেওয়ার জন্য ছুটি পাবেন। এবং ভোট কেন্দ্র গুলিতেও ছুটি থাকবে।

পোলিং অফিসারদের জন্য বিশেষ ছুটি:
ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া গভীর রাত পর্যন্ত চললে এবং পোলিং অফিসারদের ফিরতে দেরি হয়, তবে ২০শে জুন, ২০২৫ তারিখে বিশেষ ছুটি মঞ্জুর করা হতে পারে।

ভোটকেন্দ্র ও স্থানীয় ছুটি 🏢

নির্বাচনের জন্য কিছু সরকারি অফিস এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভোটকেন্দ্র, সেক্টর অফিস বা ডিস্ট্রিবিউশন-কাম-রিসিপশন সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে ভোটের সরঞ্জাম বিতরণের দিন, অর্থাৎ ১৮ই জুন, ২০২৫ (বুধবার), স্থানীয় ছুটি ঘোষণা করা হতে পারে। এটি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে আরও সুষ্ঠু ও সুবিধাজনক করতে সাহায্য করবে।

কেন এই ছুটি গুরুত্বপূর্ণ? ❓

এই ছুটি ঘোষণা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ভোটাধিকার প্রয়োগ করা প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার। এই ছুটি নিশ্চিত করবে যে কালীগঞ্জের ভোটাররা তাঁদের কর্মস্থলের বাধা ছাড়াই ভোট দিতে পারবেন। এছাড়া, বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের জন্য সবেতন ছুটির ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে তারাও এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পারেন।

আরও পড়ুন, ATM থেকে ১০০ টাকা তুললে বেরিয়ে আসছে ৫০০ টাকা। তুমুল হইচইয়ে টাকা তোলার হিড়িক

উপসংহার 🌟

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই ছুটির ঘোষণা কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি শুধুমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়, বেসরকারি সংস্থার কর্মীদেরও ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দেবে। এই উদ্যোগ গণতন্ত্রের প্রতি সরকারের প্রতিশ্রুতি এবং নাগরিকদের অধিকার রক্ষার প্রতিফলন ঘটায়।

Related Articles

Back to top button