বার্থ সার্টিফিকেট জাল কিনা, দেখতে বাড়ি বাড়ি আসবেন আশাকর্মীরা। সকলের জন্য সতর্কবার্তা

Fake Birth Certificate Detection

নদীয়া জেলার বগুলা-২ নং ব্লক থেকে উঠে আসা জাল বার্থ সার্টিফিকেট (Fake Birth Certificate) চক্রের রহস্যভেদে এবার বাড়ি বাড়ি খোঁজ নিতে আশাকর্মীদের পাঠানো হবে। নানা ধরনের কারচুপির ঘটনায় ক্ষোভ বেড়েছে স্থানীয়দের একাংশের মধ্যে, আর তা প্রতিরোধ করতে এবার পঞ্চায়েত স্তরে ইস্যু হওয়া সব জন্ম সনদ যাচাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে। স্বাস্থ্য দপ্তরের নতুন এই উদ্যোগের মাধ্যমে জাল সার্টিফিকেটের চক্র ভাঙার চেষ্টা চলছে।

নদীয়া জেলার বগুলা ব্লকের জাল বার্থ সার্টিফিকেট চক্র

নদীয়া জেলার বগুলা-২ নং ব্লক থেকে ৬ হাজারেরও বেশি জাল বার্থ সার্টিফিকেট পাওয়া গেছে। এসব সার্টিফিকেটের বেশিরভাগের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, যাদের নামে সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে, তাদের আসল অস্তিত্ব নেই। যে ঠিকানা দেখানো হয়েছে, সেই ঠিকানায় ও সেই নামের কেউ থাকে না! এমনকি, নাম, ঠিকানা, বাবা-মায়ের সম্পর্ক এসবেও প্রচুর ভুল রয়েছে। যা দেখে সন্ধেহ বাড়ে।

আশাকর্মীদের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি খোঁজখবর

জাল বার্থ সার্টিফিকেটের হাত থেকে বাঁচাতে স্বাস্থ্য দপ্তর এবার আশা কর্মীদের ব্যবহার করবে। তারা প্রত্যেক বাড়িতে গিয়ে জানতে চাইবে, ওই নামে কোনো সন্তান জন্মেছে কি না। যদি কোনো ধরনের কারচুপি পাওয়া যায়, তাহলে সেটি ধরা পড়বে সেখানেই।

আশা কর্মীদের দায়িত্বে কী কী থাকবে:

  • বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিশুর জন্মের সত্যতা যাচাই
  • কোনো ভুয়া তথ্য পাওয়া গেলে তা রিপোর্ট করা

মহকুমা শাসকের মাধ্যমে জাল ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’

এছাড়া, জাল বার্থ সার্টিফিকেট চক্রের আরেকটি অংশ হল মহকুমা শাসকের মাধ্যমে জাল ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ তৈরি করা। এই সার্টিফিকেটের মাধ্যমে অনেক সময় পোর্টালে ভুল তথ্য আপলোড করা হতো, যার ফলে জন্ম-মৃত্যু তথ্য পোর্টালে সঠিক সার্টিফিকেট ইস্যু হতো। তবে এখন এই সমস্যার সমাধান করতে ‘জন্ম মৃত্যু তথ্য’ পোর্টালকে ই-ডিস্ট্রিক্ট পোর্টালের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

নো অবজেকশন সার্টিফিকেটের ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম:

  • মহকুমা শাসক থেকে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ ইস্যু হবে
  • এই সার্টিফিকেট পোর্টালে আপলোড হওয়ার পরই জন্ম সার্টিফিকেট ইস্যু হবে

স্বাস্থ্য দপ্তরের নতুন পদ্ধতির মাধ্যমে জাল চক্র বন্ধের উদ্যোগ

এই নতুন পদ্ধতি কার্যকর হলে অনেকটাই সুরক্ষা বাড়বে। এখন, জাল সার্টিফিকেটের গ্যারান্টি থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়, তবে এই উদ্যোগের মাধ্যমে অনেকটা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

কীভাবে প্রতিরোধ করা হবে:

  • ই-ডিস্ট্রিক্ট পোর্টাল এবং জন্ম-মৃত্যু তথ্য পোর্টাল একত্রিত করা
  • সঠিক যাচাই-বাছাই ছাড়া কোনো সার্টিফিকেট ইস্যু করা হবে না

আরও পড়ুন, আবার নোট বাতিল। কাল থেকে এই মুদ্রা চলবে না?

অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা

বর্তমানে যেসব জাল সার্টিফিকেটের ঘটনা সামনে এসেছে, তাতে সরকারের অতিরিক্ত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। শুধু প্রশাসনিক ব্যবস্থা না, সমাজে সচেতনতা তৈরির জন্যও কাজ করতে হবে। এতে, শুধুমাত্র প্রশাসনিকভাবে নয়, মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হবে যাতে তারা জাল সার্টিফিকেটের হাত থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারে।

যেসব বিষয় আরও গুরুত্ব পাবে:

  • সমাজের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি
  • স্থানীয় প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ

আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত বেকার ছেলে মেয়েদের ১৫০০ টাকা করে দিচ্ছে। এই প্রকল্পে আজই আবেদন করুন

শেষ কথা

নদীয়ার জাল সার্টিফিকেট চক্র নিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তর যে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, তা নিশ্চিতভাবেই এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে, এই প্রক্রিয়া সফলভাবে চালু রাখতে হলে প্রশাসন, জনগণ এবং সামাজিক সংগঠনগুলির সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি।

Related Articles

Back to top button