আবেদন করুন স্বামী দয়ানন্দ স্কলারশিপে এবং পেয়ে যান ৫ লক্ষ টাকার অনুদান।

সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ থেকে শুরু করে সারা ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীরা উচ্চমাধ্যমিক বা দ্বাদশ শ্রেণী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর নানা ধরনের প্রফেশনাল কোর্সের আওতায় শিক্ষা গ্রহণ করতে চান। কিন্তু তাদের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে মূল বাধা হয়ে দাঁড়ায় এই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবারের আর্থিক দুর্দশা। আর তাই সমগ্র ভারতের আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের প্রফেশনাল কোর্সের আওতায় শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য স্বামী দয়ানন্দ এডুকেশন ফাউন্ডেশন -এর তরফে স্বামী দয়ানন্দ স্কলারশিপ কার্যকর করা হয়েছে। তবে এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন করার ক্ষেত্রে স্কলারশিপে আবেদনের জন্য আবশ্যক যোগ্যতা, আবেদনের প্রক্রিয়া, আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথি এই সমস্ত তথ্য সম্পর্কে সঠিকভাবে জানা প্রয়োজন। আর তাই আজকের এই পোস্টে আমরা স্বামী দয়ানন্দ স্কলারশিপ সম্পর্কিত সমস্ত প্রকার তথ্য নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি।

স্বামী দয়ানন্দ স্কলারশিপের আওতায় আবেদনের ক্ষেত্রে আবশ্যিক যোগ্যতা কি কি:-

১. ভারতে বসবাসকারী যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা সরকারি কিংবা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আওতায় ইঞ্জিনিয়ারিং মেডিকেল অথবা আর্কিটেকচার -এর মতো প্রফেশনাল কোর্সগুলির আওতায় শিক্ষাগ্রহণ করছেন তারা এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানানোর ক্ষেত্রে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
২. এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানানোর ক্ষেত্রে আবেদনকারী শিক্ষার্থীকে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় কিংবা উচ্চমাধ্যমিকে অন্ততপক্ষে ৬৫ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের রেজাল্টে গ্রেড সিস্টেমে উল্লেখ করা হয়ে থাকে তাদের ক্ষেত্রে আবেদনকারী ছাত্র কিংবা ছাত্রীর CGPA ৬.৫ হওয়া আবশ্যক।
৩. স্বামী দয়ানন্দ ফাউন্ডেশনের তরফে জারি করা তথ্য অনুসারে যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবারের বাৎসরিক আয় ৬ লক্ষ টাকা বা তার তুলনায় কম তারাই কেবলমাত্র স্বামী দয়ানন্দ স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন।
৪. রাজ্য সরকার কিংবা কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কার্যকর যেকোনো সরকারি স্কলারশিপের পাশাপাশি এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানানো যাবে। অর্থাৎ একজন ছাত্র অথবা ছাত্রী একই সাথে দুটি স্কলারশিপের আওতায় সুবিধা পেতে পারবেন।
৫. যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীর পিতা-মাতা উভয়ই কর্মক্ষেত্রে যোগদান করেছেন অথবা উভয়ই বেতনভুক্ত কর্মী তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে কেবলমাত্র পরিবারের বাৎসরিক আয়ের সার্টিফিকেট কিংবা ইনকাম ট্যাক্স রিটার্নের সাপেক্ষে এই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

স্বামী দয়ানন্দ স্কলারশিপের অধীনে ছাত্র-ছাত্রীরা কত টাকার অনুদান পেয়ে থাকেন?

স্কলারশিপের আওতাভুক্ত ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রত্যেক বছরে ৫ লক্ষ টাকার অনুদান দেওয়া হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন:- পি এম কিষাণ যোজনার আওতায় মিলবে ৬০০০ টাকার অনুদান। আবেদন জানাতে এই পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করুন।

আবেদনের প্রক্রিয়া:-

১. স্বামী দয়ানন্দ স্কলারশিপের আওতায় আবেদনের ক্ষেত্রে আপনি বাড়িতে বসেই আবেদনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারবেন। অনলাইনের মাধ্যমে আবেদনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার জন্য আপনাকে স্বামী দয়ানন্দ এডুকেশন ফাউন্ডেশন -এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://www.swamidayanand.org/ -এ যেতে হবে। এরপর হোম পেজের ওপরে থাকা Scholarship অপশনে ক্লিক করুন এবং আপনার সামনে যে অপশনগুলি তার মধ্যে থেকে INDIA SCHOLARSHIP অপশনটি নির্বাচন করে নিন। পরবর্তীতে আপনার সামনে যে পেজটি আসবে তাতে আপনি স্বামী দয়ানন্দ স্কলারশিপ সম্পর্কে সমস্ত তথ্য দেখতে পারবেন। এরপর এই পেজের নিচের দিকে থাকা DOWNLOAD APPLICATION অপশনে ক্লিক করুন এবং এই স্কলারশিপের আওতায় নিজের নাম নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ফর্মটি ডাউনলোড করে নিন।

swami-dayananda-scholarship

পরবর্তীতে আপনাকে এই ফর্মটি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। ফর্ম পূরণের ক্ষেত্রে আপনাকে আপনার নাম, জন্ম তারিখ, ইমেইল এড্রেস, স্থায়ী ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, আবেদনকারী ছাত্র ও ছাত্রী কোন কলেজের আওতায় পড়াশোনা করছেন তার নাম, শিক্ষার্থী কোন শিক্ষাবর্ষে পাঠরত তা সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে। এরপর আবেদনকারী ছাত্র বা ছাত্রীকে তার পিতার নাম, ফোন নম্বর, পিতার শিক্ষাগত যোগ্যতা সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। পরবর্তীতে আবেদনকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য সহ ফর্মে উল্লেখিত অন্যান্য প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্যগুলি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে এবং ফর্মটিকে স্ক্যান করতে হবে। এরপর ফর্মে উল্লেখিত সমস্ত নথি সঠিকভাবে স্ক্যান করতে হবে এবং আবেদনপত্র ও অন্যান্য নথিগুলি স্ক্যান করার মাধ্যমে একটি পিডিএফ ফাইল তৈরি করতে হবে। সবশেষে UPLOAD HERE অপশনে ক্লিক করে এই পিডিএফ ফাইলটি আপলোড করতে হবে।

আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথিসমূহ:-

১. আবেদনকারী ছাত্রী বা ছাত্রীর মাধ্যমিক পরীক্ষার মার্কশিট।
২. উচ্চ মাধ্যমিকের মার্কশীট।
৩. সমস্ত সেমিস্টারের মার্কশীট।
৪. Bonafide Certificate
৫. এডমিশন লেটার অথবা রাঙ্ক সার্টিফিকেট।
৬. সিট অ্যালটমেন্টের কাউন্সেলিং লেটার।
৭. প্রতিটি সেমিস্টারের ফি কিংবা বার্ষিক ফি প্রদানের প্রমাণপত্র।
৮. স্কলারশিপ লেটারের কপি কিংবা কোন এডুকেশন লোন নেওয়া থাকলে তার প্রমাণপত্র।
৯. স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার প্রমাণপত্র/ রেশন কার্ড/ পিতা কিংবা মাতার আইডেন্টিটি প্রুফ।
১০. আধার কার্ড/ প্যান কার্ড/ ভোটার কার্ড।
১১. পরিবারের বাৎসরিক আয়ের সার্টিফিকেট।
১২. চাষযোগ্য জমির সার্টিফিকেট অথবা দোকানের ছবি।
১৩. বিগত তিন মাসের ইলেকট্রিক বিলের কপি।
১৪. Rent Agreement
১৫. বাড়ির ছবি এবং পরিবারের সমস্ত সদস্যদের নিয়ে একটি ছবি।
১৬. ইনস্টিটিউটের তরফে এটেস্টেড ইনস্টিটিউট ব্যাংক ডিটেইলসের নথি।
১৭. আবেদনকারী ছাত্র বা ছাত্রীর একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

আবেদনের সময়সীমা:-

স্বামী দয়ানন্দ স্কলারশিপের আওতায় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ছাত্রছাত্রীদের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া কবে শুরু হবে তা এখনো পর্যন্ত অফিসিয়াল ভাবে জানানো হয়নি। তবে বিভিন্ন রিপোর্টে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, খুব শীঘ্রই এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদনের জন্য পোর্টাল ওপেন করা হবে।

Related Articles

Back to top button