১৫ লাখ মানুষের রেশন কার্ড বাতিল করলো সরকার। আর ফ্রি রেশন পাবেন না। কাদের কার্ড বাতিল হলো?
Ration Card Cancelled by Government
সরকারের সম্প্রতি নেওয়া একটি সিদ্ধান্তে কমপক্ষে ১৫ লক্ষ রেশন কার্ডধারী মানুষ (Ration Card) ফ্রি রেশন পরিষেবা থেকে বাদ পড়েছেন। সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে সারা রাজ্যের দরিদ্র জনগণের মধ্যে একটি বিরাট প্রতিকূলতা সৃষ্টি হতে পারে। রেশন ব্যবস্থা থেকে নাম বাদ দেওয়ার এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে একটি বিশেষ উদ্দেশ্য— জালিয়াতি রোধ এবং খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্পের উন্নয়ন।
কাদের রেশন কার্ড বাতিল?
খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার উদ্যোগে মধ্যপ্রদেশ সরকার খাদ্য সুরক্ষা আইনের (RSKY) অধীনে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য বিতরণের (Free Ration Scheme) প্রকল্পের স্বচ্ছতা আনতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো, প্রকৃত দরিদ্র মানুষদের কাছে খাদ্যশস্য পৌঁছানো, যাতে খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্প সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়।
ই-কেওয়াইসি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ১৫ লক্ষ নাম বাদ
সরকারের তথ্যমতে, ১৫ লক্ষ রেশন কার্ডধারীকে বাদ দেওয়া হয়েছে যারা বা তো মৃত, অথবা গত চার মাস ধরে রেশন কেন্দ্রে যাননি। এছাড়া, কিছু মানুষের নাম জাল বা নকল হওয়ার কারণে তাদেরও বাদ দেওয়া হয়েছে। এমনকি, দুই জায়গায় একই ব্যক্তির নাম পাওয়া গেছে, যা সিস্টেমের ত্রুটি নির্দেশ করে।
নতুন যোগ্যদের তালিকায় অন্তর্ভুক্তি
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে, নতুন যোগ্য সুবিধাভোগীদের যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। সরকার দাবি করছে যে, ৮৩ লক্ষ মানুষের ই-কেওয়াইসি এখনও বিচারাধীন, এর মধ্যে ৩ থেকে ৪ লক্ষ নাম জাল বা নকল হতে পারে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, প্রকৃত সুবিধাভোগীরা নিশ্চিতভাবে রেশন পাবেন।
ই-কেওয়াইসি: রেশন কার্ডধারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ
ই-কেওয়াইসি (EKYC) প্রক্রিয়া খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে স্বচ্ছতা এবং বাধাহীন বিতরণ নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। এই প্রক্রিয়ায়, আধার-ভিত্তিক বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের মাধ্যমে শুধুমাত্র যোগ্য ব্যক্তিরাই রেশন পাবেন। সরকার আশা করছে, এর মাধ্যমে অনেক দুর্নীতি এবং রেশন ব্যবস্থায় জালিয়াতি কমানো সম্ভব হবে।
ই-কেওয়াইসি করার শেষ তারিখ
সরকার জানিয়েছে যে, ই-কেওয়াইসি প্রচার আগামী ৩১ মে পর্যন্ত চলবে। এর পরেই সমস্ত নতুন যোগ্য ব্যক্তিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এর মাধ্যমে খাদ্যশস্যের প্রকৃত সুবিধাভোগীরা ঠিক সময়ে তাদের অধিকার পাবে।
২.৯০ লক্ষ টন বিনামূল্যে রেশন বিতরণ
এছাড়া, সরকার প্রতি মাসে রাজ্যে ২.৯০ লক্ষ টন খাদ্যশস্য ফ্রি রেশন বিতরণ করছে। এর মধ্যে রয়েছে ১.৭৪ লক্ষ টন চাল এবং ১.১৬ লক্ষ টন গম। গম সংগ্রহের পর, সরকার কেন্দ্রের কাছে চালের কোটা কমিয়ে গমের কোটা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে।
আরও পড়ুন, সরকারের নতুন প্রকল্পে প্রত্যেক পরিবার কে ৩০০০০ টাকা করে দিচ্ছে। এইভাবে আবেদন করুন
সাধারণ মানুষের করণীয়
যদিও সরকারের উদ্দেশ্য পরিষ্কার— স্বচ্ছতা আনা, তবে ১৫ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়ার ফলে তাদের কী হবে, সেটি বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকের পক্ষে রেশন ছাড়া বেঁচে থাকা কঠিন, বিশেষ করে যারা রেশন পরিষেবার উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল।
কিভাবে কার্ড চালু রাখবেন ও নতুন নাম নথিভুক্ত করবেন?
সরকারের তরফ থেকে আশা করা হচ্ছে যে, ই-কেওয়াইসি প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হলে, নতুন যোগ্য মানুষরা তাঁদের খাদ্যশস্য পাবেন। তবে, যারা ইতিমধ্যে বাদ পড়েছেন তারা পুনরায় তাদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কী পদক্ষেপ নিতে পারেন, সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা এখনও পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন, লক্ষ্মীর ভান্ডার, কৃষক বন্ধু ও বিধবা ভাতার টাকা বাড়ছে! এই মাসের টাকা কবে পাবেন?
উপসংহার
মধ্যপ্রদেশ সরকারের রেশন কার্ড নিয়ে এই নতুন পদক্ষেপের ফলস্বরূপ, খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্পে নতুন পরিবর্তন আসবে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ফ্রি রেশন ব্যবস্থা আরও স্বচ্ছ, দুর্নীতি মুক্ত এবং প্রকৃত দরিদ্র মানুষের জন্য সুবিধাজনক হবে। তবে, সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং জনসাধারণের জন্য নতুন সুযোগ কতটা কার্যকর হবে, সেটি সময়ের সঙ্গে বোঝা যাবে