West Bengal: লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কৃষক বন্ধু ও বাংলা আবাস যোজনা নিয়ে বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর। টাকা পেতে হলে জেনে রাখুন
Lakshmir Bhandar Krishak Bandhu Awas Yojana
পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) সমস্ত জনমুখী প্রকল্পের কথা বলতে গেলে সর্বপ্রথম মাথায় আসে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কৃষক বন্ধু ও বাংলা আবাস যোজনার কথা। আর সাধারণ মানুষের কল্যাণে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। এবার সেইরকম কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে মিলল বিরাট আপডেট। ডিসেম্বর মাস থেকেই রাজ্য সরকার তার একাধিক প্রকল্পে বেশ কিছু পরিবর্তন আনছে। এই তালিকায় রয়েছে লক্ষ্মীর ভান্ডার, তরুণের স্বপ্ন এবং বার্ধক্য ভাতা প্রকল্প। যার ফলে বহু সুবিধাভোগীদের নাম বাতিল হতে পারে লিস্ট থেকে। যোগ্যদের সঠিকভাবে সুবিধা দেওয়া এবং প্রকল্পে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত।
West Bengal Lakshmir Bhandar Krishak Bandhu Awas Yojana
তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের ট্যাবের টাকা
অতিমারীর সময় স্কুল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের বিশেষত দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পড়াশোনার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার চালু করে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্প। যার আওতায় প্রতিবছর মোবাইল ফোন বা ট্যাব কেনার জন্য নগদ ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয় তাদের একাউন্টে। এতদিন সকলে এর টাকা ঠিকঠাক পেলেও সাম্প্রতিককালে বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী ও মহিলারা অভিযোগ করেন যে, প্রকল্পের অর্থ তাদের অ্যাকাউন্টে জমা পড়ছে না। ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গ সাইবার পুলিশ ও প্রশাসনের নজরে আসে।
তদন্ত শুরু করার পর সাইবার পুলিশ বিভাগের জানতে পারে যে একটি সংগঠিত প্রতারক চক্র শিক্ষার্থীদের অ্যাকাউন্ট নম্বর সংগ্রহ করে সেগুলি নিজেদের অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে পরিবর্তন করেছে। এর ফলে প্রকল্পের অর্থ প্রকৃত উপভোক্তাদের পরিবর্তে জালিয়াতদের অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে।
এমতাবস্থায় সরকার প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেই দুষ্কৃতিদের ধরে শাস্তি দিতে। তারপর ফের নতুন করে ছাত্র-ছাত্রীদের একাউন্টে টাকা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। ডিসেম্বর মাসেই এই প্রক্রিয়া শুরু হবে। আর এরই মধ্যে মুর্শিদাবাদে প্রায় ৫০০০ ছাত্র ছাত্রীর একাউন্টে (৪৮৪১ জনের একাউন্টে) দুবার করে মোট ২০০০০ টাকা ঢুকেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। যা নিয়ে আজ বিকালে জরুরী বৈঠক করেছেন রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ। আর এই টাকা যাতে পড়ুয়ারা না তুলতে পারে টার জন্য নাকি একাউন্ট ফ্রিজ করে দয়া হয়েছে বলে আনন্দবাজারের সাংবাদিকদের সামনে অভিযোগ করেছেন পড়ুয়া ও অভিভাবকদের একাংশ।
আরও পড়ুন, ডিসেম্বর থেকে এই মহিলারা আর লক্ষীর ভাণ্ডার প্রকল্পের টাকা পাবেন না। টাকা পেতে কি করতে হবে?
লক্ষীর ভান্ডার এবং বার্ধক্য ভাতা আবাস যোজনা
তদন্তে জানা যায়, এই জালিয়াতি চক্র শুধু ‘তরুণের স্বপ্ন’ নয়, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ ও ‘বার্ধক্য ভাতা’ প্রকল্পের টাকাও জালিয়াতি করেছে। বার্ধক্য ভাতার মাধ্যমে বয়স্ক নাগরিকদের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হলেও, এই প্রতারক চক্র তার উপভোক্তাদের বরাদ্দ অর্থ চুরি করেছে। এই চক্রটি এতটাই সুচারুভাবে এই প্রতারণা চালিয়েছে যে প্রথমদিকে বিষয়টি সবার নজর এড়িয়ে যায়।
লালবাজার সাইবার পুলিশের উদ্যোগে সন্দেহভাজন বেশ কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা হয় এবং সেগুলিকে অবিলম্বে ফ্রিজ করে দেওয়া হয়। তদন্তে উঠে আসে, ঝাড়খণ্ডের কিছু প্রতারকদের সাথে পশ্চিমবঙ্গের এই চক্রের যোগসূত্র রয়েছে। এর মাধ্যমে এরা পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডেও সরকারি প্রকল্পের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন, রেশন কার্ড গ্রাহকদের জন্য দারুন সুখবর! এবার থেকে বেশি করে গম পাবেন! কারা পাবেন সুবিধা?
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুই প্রকল্পের উপভোক্তাদের তালিকা সঠিকভাবে যাচাইয়ের নির্দেশ দেন। জানানো হয়েছে ডিসেম্বর থেকেই এই সব প্রকল্পে টাকা দেওয়ার আগে উপভোক্তাদের ভোটার কার্ড, আধার কার্ডের তথ্য সাথে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য মিলিয়ে যাচাই করা হবে। যাদের গরমিল থাকবে তাদের বাদ দেওয়া হবে সুবিধাভোগীর তালিকা থেকে।