পশ্চিমবঙ্গে ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ কবে পাবেন? মুখ্যমন্ত্রী কি জানালেন? কিভাবে পাবেন জেনে নিন

Dearness Allowance

পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের ৪ সপ্তাহের মধ্যে ২৫% বকেয়া ডিএ (Dearness Allowance) দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court of India). এই বকেয়া ডিএ কবে পাবেন? কিভাবে পাবেন? আজ মুখ্যমন্ত্রী এই ব্যাপারে কি জানালেন? সরকারের পক্ষ থেকে কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি প্রভৃতি নিয়ে সরকারি কর্মীরা চিন্তায় রয়েছেন। বিস্তারিত জেনে নিন।

২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ কবে পাবেন?

ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ রায় অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীরা আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে ২৫% ডিএ (মহার্ঘ ভাতা) পাবেন। এই নির্দেশনা দেওয়ার পর, রাজ্য সরকারি কর্মীদের (Government Employees) মধ্যে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে যে, তারা আদৌ তাদের বকেয়া ডিএ পাবেন কিনা। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে সরকারি কর্মীরা তাদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা প্রাপ্তির জন্য আদালতের দরজায় ধর্ণা দিয়েছেন। যদিও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ এসেছে, তবে কর্মীদের শঙ্কা রয়েছে যে রাজ্য সরকার এই বিষয়ে আবারও নানা অজুহাত তুলে ডিএ প্রদান বিলম্বিত করতে পারে।

পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের ডিএ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপট

বছরখানেক আগে, রাজ্য সরকার কর্মীদের ডিএ বাড়ানোর জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তবে এই বিষয়টি দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের মধ্যে পড়ে যায়। ২০১৫ সাল থেকেই এই বিষয়টি আদালতের দিকে চলে যায়, এবং ২০২৩ সালের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কর্মীরা তাদের পাওনা অর্থের কিছু অংশ পেতে যাচ্ছেন।

আদালতের নির্দেশে ২৫% ডিএ প্রদান

ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ২৫% ডিএ প্রদান করবে। যদিও এই নির্দেশনা এসেছে, কর্মীরা এই বিষয়টি নিয়ে সতর্ক, কারণ তাদের অভিযোগ যে রাজ্য সরকার ইতিপূর্বে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার ব্যাপারে নানা প্রকারের অজুহাত দেখিয়েছে এবং তাদের পাওনা অর্থ প্রদানে অবহেলা করেছে। এখন আবারও সেই একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে, এমন আশঙ্কা করছেন তারা।

বকেয়া ডিএ পিএফ একাউন্টে দেওয়ার পরিকল্পনা

সূত্রমতে, রাজ্য সরকার এক্ষেত্রে ডিএ বকেয়া ভাতা পিএফ একাউন্টে জমা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তবে, এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সম্পর্কিত কোন স্পষ্ট তথ্য বা সময়সীমা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। কর্মীরা জানাচ্ছেন, তারা এই সিদ্ধান্তের পেছনে সরকারটির কোনও পরিকল্পনা দেখছেন না, এবং তারা তা পেতে কীভাবে কার্যকর হবে সে বিষয়ে পরিষ্কার কিছু জানানো হয়নি।

মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া

আজ, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ডিএ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আদালতের বিচার্য বিষয়ে কোনও মন্তব্য করবো না। আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।” মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য কর্মীদের মধ্যে আরও কিছুটা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, কারণ তারা মনে করছেন, সরকার হয়তো কেবল আইনি নিয়মের পেছনে লুকিয়ে আরও বিলম্ব করতে পারে।

রাজ্য সরকারি কর্মীদের দাবি

পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীরা গত ৮ বছর ধরে নিজেদের বকেয়া ডিএ পাওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন। এই দীর্ঘ সময় ধরে তারা আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন, তবে ২০২৩ সালে শীর্ষ আদালতের রায়ের পর তারা আশা করেছিলেন যে তাদের পাওনা অর্থ দ্রুতই তাদের অ্যাকাউন্টে জমা হবে। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে যে দেরি এবং অস্পষ্টতা দেখা যাচ্ছে, তা কর্মীদের মধ্যে আরও বেশি সন্দেহ তৈরি করছে।

আরও পড়ুন, তিন ধাপে পেনশন ও বেতন বৃদ্ধি হবেপশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের

কর্মীদের প্রতি সরকারের অবস্থান

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যদিও এই বিষয়টি আইনগতভাবে পরিচালিত হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে, কিন্তু কর্মীদের মনে এখনো সন্দেহ বিরাজ করছে যে রাজ্য সরকার তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করবে কিনা। দীর্ঘ ৮ বছর পরেও, যদি তারা তাদের পাওনা ডিএ পায় না, তবে তা সরকারের প্রতি একটি বড় আঘাত হবে বলে মনে করছেন কর্মীরা।

উপসংহার

সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশনা আসার পর পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীরা কিছুটা আশা পেয়েছেন, কিন্তু সেই আশা কি পূর্ণ হবে, তা নিয়ে এখনও অনেক অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যেভাবে ডিএ এবং মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, তাতে কর্মীদের সন্দেহের মেঘ কাটছে না। এখন দেখার বিষয় হবে, রাজ্য সরকার কীভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করে এবং কর্মীদের আইনানুগ অধিকার নিশ্চিত করে।

Related Articles

Back to top button