SIM Card: এবার থেকে কেনা যাবে না একের বেশি সিম। নতুন নিয়ম আনলো কেন্দ্র।
বছর শেষের আগেই সাধারণ জনগণের জন্য একের পর এক চমক সাজিয়ে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। নতুন বছর শুরু হওয়ার আগেই সিম সংক্রান্ত (SIM Card) নিয়ম গুলিতে বদল আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে সিম কার্ড সংক্রান্ত নির্দেশিকা এই প্রথম কার্যকর করা হলো এমনটা নয়, ইতিপূর্বেও কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সিম সংক্রান্ত নানা ধরনের নির্দেশিকা কার্যকর করা হয়েছিল। আর এবারে নতুন বছর শুরু হওয়ার ঠিক আগে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে পুনরায় সিম কেনার নিয়মগুলিতে নানা ধরনের বদল আনা হলো, এমনটাই দাবি করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের টেলিযোগাযোগ বিভাগের তরফে।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, বিগত আগস্ট মাসেই সিমকার্ড সংক্রান্ত নিয়মে পরিবর্তন আনার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। ২০২৩ সালের ১লা অক্টোবর থেকেই সিমকার্ড সংক্রান্ত নতুন নিয়মগুলি কার্যকর করার কথা ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে তা ২ মাস পিছিয়ে দেওয়া হয় এবং আগত বুধবার থেকেই সিমকার্ড সংক্রান্ত এই নতুন নিয়মগুলি কার্যকর করা হবে।
সিমকার্ড (SIM Card) সংক্রান্ত কি কি নতুন নিয়ম কার্যকর করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার:-
১. কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কার্যকরী নিয়ম অনুসারে জানা গিয়েছে যে, এবার থেকে সিমকার্ড ডিলারদের টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে একটি বিশেষ চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে। মূলত সিম কার্ডকে কেন্দ্র করে যেসমস্ত অবৈধ কার্যকলাপগুলি হয়ে থাকে তা থেকে সিম কার্ড বিক্রেতাদের বিরত রাখার জন্যই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এইরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, এমনটাই দাবি করা হচ্ছে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের তরফে। টেলি কমিউনিকেশন কোম্পানিগুলির চুক্তি ভেঙ্গে কোনো সিমকার্ড ডিলার যদি কোনোরূপ অবৈধ কাজে ছড়িয়ে পড়ে তবে তাকে ১০ লক্ষ টাকার জরিমানা দিতে হবে, শুধু তাই নয় উক্ত ডিলারের পরিষেবা ৩ বছরের জন্য বন্ধ করা হবে, এমনটাই জানা গিয়েছে এই নতুন নিয়ম অনুসারে।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প সম্পর্কিত বিশেষ নিয়ম কার্যকর করা হলো রাজ্য সরকারের তরফে।
২. এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কার্যকরী এই নতুন নিয়ম অনুসারে আরো জানানো হয়েছে যে, সিম বিক্রেতাদের তাদের বিশদ তথ্য স্থানীয় পুলিশের কাছে জমা করতে হবে। সিমকার্ড বিক্রেতাদের সমস্ত প্রকার তথ্য প্রশাসনের কাছে রাখার জন্যই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এইরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। তবে এর জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় তাদের নাম নথিভুক্তকরণ করতে হবে, ১লা ডিসেম্বর থেকেই ১২ মাসের জন্য নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন সিমকার্ড ডিলাররা।
৩. কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকরী নতুন নিয়মে আরো বলা হয়েছে যে, এবার থেকে নতুন সিমকার্ড কেনার সময় বাধ্যতামূলকভাবে ‘ডেমোগ্রাফি’র বিবরণ প্রদান করতে হবে। মূলত সিমকার্ড বিক্রেতা ক্রেতার আধার কার্ডের কিউআর কোড স্ক্যান করার মাধ্যমে ক্রেতার সম্পর্কে বিশদ তথ্য গ্রহণ করবেন। এর পাশাপাশি আরো জানানো হয়েছে যে, কোনো গ্রাহক যদি কোনো ফোন নম্বর ছেড়ে দেন তবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ৯০ দিনে পর সেটি নতুন গ্রাহককে দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি আরও বলা হয়েছে যে, সিম বদলানোর ক্ষেত্রে গ্রাহককে সম্পূর্ণ কেওয়াইসি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
রেশন কার্ড নিয়ে জারি হলো নতুন নিয়ম। আপনার রেশন কার্ড থাকলে এখনই জেনে নিন।
৪. কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জারি করা এই নতুন নিয়ম অনুসারে, একই পরিচয়পত্রের মাধ্যমে মাত্র ৯ টি সিম কেনা যাবে, এছাড়া একইসঙ্গে অনেক সিমকার্ড জারি করার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে ব্যবসা এবং কর্পোরেটের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ব্যক্তিরা ৯ টির বেশি সিমের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন, এমনটাই জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। সেক্ষেত্রে যেসকল ব্যক্তিদের কাছে ৯ টির বেশি সিমকার্ড থাকবে তাদের তথ্য কেওয়াইসির মাধ্যমে জানাতে হবে। মূলত সিম সংক্রান্ত ডিজিটাল জালিয়াতি বন্ধ রুখতেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, এমনটাই জানা গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে।
সিম কার্ড সংক্রান্ত নতুন নির্দেশিকা জারি করার এই বিষয়টি নিয়ে সমগ্র ভারতের সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহলের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের মধ্যে যথেষ্ট প্রশ্ন উঠেছে, আর এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্র সরকারের তরফে জানানো হয়েছে যে, অনলাইনে টাকা লেনদেনের সময় জালিয়াতি এবং ফোন করে টাকা হাতানোর মতো ঘটনাগুলি বন্ধ করার জন্যই এইরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব -এর মতে, ইতিপূর্বে একজন ব্যক্তি একাধিক সিমকার্ড ব্যবহার করতে পারতেন তবে নতুন নিয়ম দ্বারা তা বন্ধ করা হয়েছে, এর ফলে আগামী দিনে জালিয়াতি যথেষ্ট কমবে বলেই আশা রাখছেন তিনি।