SSC: যোগ্য শিক্ষকেরা স্কুলে যেতে পারবেন। পশ্চিমবঙ্গের চাকরি হারা শিক্ষকদের জন্য সুপ্রিম কোর্টের নয়া রায়ে স্বস্তি
Supreme Court Verdict on WBSSC Scam Case
পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (West Bengal SSC Scam) নয়া মোড়। যোগ্য অযোগ্য বাছাই না করা গেলেও আপাতত যে সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই, তারা স্কুলে যেতে পারবেন। নিয়মিত বেতন ও পাবেন। কিছুক্ষণ আগেই সুপ্রীম কোর্টের রায়ে কার্যত স্বস্তিতে চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশের। তবে সেই সাথে বিতর্ক দানা বেধেছে শিক্ষা কর্মীদের মধ্যে। বিস্তারিত জেনে নিন।
✅ SSC মামলায় কী বলল সুপ্রিম কোর্ট?
- সুপ্রীম কোর্ট জানিয়েছে, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির যেসব শিক্ষক ‘দাগি’ নন, তাঁরা স্কুলে যেতে পারবেন।
- রাজ্য সরকার ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে ৩১ মে’র মধ্যে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, চলতি বছরে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু ও শেষ করা হবে।
- নিয়োগ পরীক্ষা এবং ফলাফল ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই সম্পূর্ণ করতে হবে।
- সময়সীমা মানা না হলে, এই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নতুন নির্দেশ দেবে আদালত।
- এই নির্দেশ কেবলমাত্র শিক্ষক পদে থাকা ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য; গ্রুপ সি ও ডি কর্মীদের ক্ষেত্রে পুরনো নির্দেশই বহাল থাকবে।
📌 পটভূমি: কীভাবে শুরু হয়েছিল এই বিতর্ক?
৩ এপ্রিল, সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলকে সম্পূর্ণভাবে বাতিল করে দেয়। আদালতের বক্তব্য ছিল, পুরো প্যানেল নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত। ফলে প্রায় ২৫,৭৩৫ জন শিক্ষক ও কর্মীর চাকরি বাতিল হয়। তাঁদের মধ্যে অনেকেই সিবিআই তদন্তে ‘অযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন, আবার অনেক ‘যোগ্য’ প্রার্থীরও চাকরি গেছে।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আদালতে জানায়, এই রায়ের ফলে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় মারাত্মক প্রভাব পড়বে। রাজ্যের ৯,৪৮৭টি উচ্চ বিদ্যালয় ও ৬,৯৫২টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সঙ্কট দেখা দেবে।
🏫 পর্ষদের যুক্তি ও সুপ্রিম কোর্টের সাড়া
পর্ষদ আবেদন করে জানায়, যাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই, তাঁরা যেন অন্তত এই শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত বা নতুন নিয়োগ সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত স্কুলে পড়াতে পারেন। সেই দাবিকেই আংশিকভাবে মেনে নেয় সুপ্রিম কোর্ট।
এই রায় শিক্ষক সমাজ এবং ছাত্রছাত্রীদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ স্বস্তি। আদালতের দিক থেকে এটি একটি ভারসাম্যপূর্ণ পদক্ষেপ—একদিকে যেমন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান বজায় রাখা হয়েছে, অন্যদিকে শিক্ষার গতি স্বাভাবিক রাখার জন্যও সময়সীমার মধ্যে নতুন নিয়োগ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই রায়ের মাধ্যমে আদালত সময়সীমা বেঁধে দিয়ে প্রশাসনকে যেমন দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করার বার্তা দিয়েছে, তেমনি রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের মুখ থেকে সাময়িক রেহাই দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, রাজ্য সরকার সেই নির্ধারিত সময়সীমা মানতে কতটা সফল হয়।
সংবাদপ্রসঙ্গঃ
- ২৬ হাজার শিক্ষক শিক্ষা কর্মীর চাকরি বাতিল
- সুপ্রিম কোর্টের শিক্ষক নিয়োগ রায়
- SSC ২০১৬ দুর্নীতি মামলার আপডেট
- মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আবেদন
- শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ
- দাগি নন এমন শিক্ষক স্কুলে যাবেন
- ৩১ মে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
- ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ পরীক্ষা