Kisan Mandhan Yojana: কৃষকদের প্রতিমাসে মিলবে 3000 টাকা। কিভাবে আবেদন করবেন?
PM Kisan Mandhan Yojana Payment
ভারতবর্ষের নিপীড়িত, দরিদ্র এবং পিছিয়ে পড়া জনজাতির মধ্যে অন্যতম দেশের মানুষকে অন্নদাতা কৃষক বন্ধুরা (Kisan Mandhan Yojana) প্রতি বছর সাধারণ মানুষের মুখে দু মুঠো অন্ন তুলে দিচ্ছেন। তাদের অবস্থাই সকলের থেকে পিছিয়ে থাকে। এই কারণেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে দেশের কৃষকদের অগ্রগতির উদ্দেশ্যে দুর্দান্ত প্রকল্প ঘোষণা করা হল! এই প্রকল্পের মাধ্যমে (Kisan Mandhan Yojana) এবার দেশের কৃষকেরা সরাসরি কেন্দ্রের তরফে ঘরে বসেই পেয়ে যাবেন মাসিক ৩০০০ টাকা আর্থিক সহায়তা। মূলত দেশের কৃষকদের অর্থনৈতিক দিক থেকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই এই প্রকল্প শুরু করল কেন্দ্রীয় সরকার। বিস্তারিত জানার জন্য চোখ রাখুন আজকের প্রতিবেদনে।
কৃষকদের অগ্রগতির উদ্দেশ্যে নতুন প্রকল্প
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ২০১৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করা হয়েছিল কৃষক মানধন যোজনা (Kisan Mandhan Yojana). দেশের কৃষকদের অর্থনৈতিক দিক থেকে সবল করে তোলার উদ্দেশ্যে এই প্রকল্পের মাধ্যমে এখনো পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। বিশেষত দেশের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের (Farmers) জন্য এই প্রকল্প আশার আলো। কৃষকদের বৃদ্ধ বয়সে আর্থিক সুরক্ষা প্রদান থেকে শুরু করে একাধিক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় এই প্রকল্পের মাধ্যমে। তাই এই প্রকল্পের গুরুত্ব বোঝার এবং এর লাভ সরাসরি পাওয়ার জন্য অবশ্যই জেনে নিতে হবে সঠিক আবেদন পদ্ধতি।
কিষাণ মানধন যোজনা (Kisan Mandhan Yojana) কী?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগে শুরু হওয়া PM Kisan Yojana দুর্দান্ত প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের কৃষকদের বৃদ্ধাবস্থায় আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। এদিকে আর্থিক সহায়তার পরিবর্তে মাসিক পেনশন বললেও ভুল হয় না। এই স্কিমের আওতায় কৃষকেরা প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করতে থাকেন। একজন কৃষক ঠিক যতটা পরিমাণ টাকা জমা করেন, তার সমপরিমাণ টাকা সরকার দেয় সেই একাউন্টে। অর্থাৎ একেবারেই একজন কৃষকের একাউন্টে দ্বিগুণ টাকা জমা হয়ে যায়। এভাবেই ঐ কৃষকের যখন ৬০ বছর পূর্ণ হয় অর্থাৎ তিনি যখন বৃদ্ধকালীন বয়সে প্রবেশ করেন, তখন থেকেই প্রতিমাসে কার কাছে ৩০০০ টাকা করে পেনশন ঢোকা শুরু হয়ে যায়।
কিষাণ মানধন যোজনা কৃষকদের জীবনে আশার আলো
এতদিন পর্যন্ত সরকারি কর্মচারীরাই এই ধরনের পেনশন স্কিমের আওতায় সুযোগ-সুবিধা পেতেন। তবে বর্তমানে PM Kisan Mandhan Yojana সেই ধারণাকে একেবারেই বদলে দিয়েছে। এক কথায়, কিষান মানধন যোজনা বৃদ্ধকালীন অবস্থায় একজন কৃষককে আর্থিক অনিশ্চয়তার হাত থেকে রক্ষা করে। এর পাশাপাশি তাকে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর এবং নিরাপদ থাকতেও সাহায্য করে। যার ফলে এই প্রকল্প দেশের কৃষকদের জীবনে আসার আলোর মতোই গুরুত্বপূর্ণ।
এই স্কিমে আবেদনের যোগ্যতা
Kisan Mandhan Yojana স্কিমে আবেদনের জন্য নিম্নলিখিত যোগ্যতাগুলি অবশ্যই থাকতে হবে
- আবেদনকারী ব্যক্তিকে অবশ্যই ভারতবর্ষের নাগরিক হতে হবে এবং তাকে কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে।
- যাদের বার্ষিক কৃষিজ জমি ২ হেক্টর বা তার কম, তারাই এই প্রকল্পে আবেদন জানাতে পারবেন।
- আবেদনকারী যদি কোন রকম সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন, তাহলে এই প্রকল্পে আবেদন জানাতে পারবেন না।
- আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছর থেকে ৪০ বছরের মধ্যবর্তী হতে হবে।
কারা কীভাবে টাকা জমা দেবেন?
যে বয়সে আপনি আবেদন জানাচ্ছেন, তার ওপর ভিত্তি করেই নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা রাখতে হয়।এই স্কিমে (Kisan Mandhan Yojana) নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা রাখলে তবেই বৃদ্ধাবস্থায় প্রতি মাসে ৩০০০ টাকা করে পেনশন পাওয়া যায়। তাহলে চলুন, কোন বয়সে কত টাকা করে জমা রাখবেন, সেই হিসাবটা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জেনে নেওয়া যাক-
এক্ষেত্রে ১৮ বছর বয়সে যদি আপনি টাকা জমা রাখা শুরু করেন, তাহলে আপনাকে প্রতিমাসে ৫৫ টাকা করে এই একাউন্টে জমা করতে হবে। এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের তরফেও সমপরিমাণ টাকা অর্থাৎ ৫৫ টাকা করে আপনার ব্যাংক একাউন্টে জমা করা হবে। অপরদিকে আপনি যদি ৪০ বছর বয়সে টাকা জমা করতে শুরু করেন, তাহলে আপনাকে প্রতিমাসে ২০০ টাকা জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রেও সরকারের তরফে আপনার ব্যাংক একাউন্টে ২০০ টাকা করেই প্রতি মাসে জমা দেওয়া হবে।
আপনাদের জমা করা এই টাকা কেন্দ্রীয় সরকারের বীমা সংস্থা LIC এর মাধ্যমে প্রতিমাসে জমা হবে এবং সরকারের কাছে সংরক্ষিত থাকবে।
বাড়তি রেশনের সাথে পাবেন ২০০০ টাকা! জুলাই মাসের রেশন তালিকায় চমক। কোন রেশন কার্ডে কি কি পাবেন দেখুন
Kisan Mandhan Yojana এর অন্যান্য সুবিধা
- Kisan Mandhan Yojana এর মাধ্যমে আবেদনকারী ৬০ বছর থেকে শুরু করে আজীবন প্রতিমাসে তিন হাজার টাকার পেনশন পাবেন।
- কৃষকের মৃত্যুর পর তার স্বামী বা স্ত্রী ওই পেনশনের অর্ধেক করে প্রতি মাসে পেনশন হিসাবে পাবেন।
- কোন কারনে আপনি যদি মাঝ পথেই এই স্কিমে টাকা জমানো বন্ধ করে দেন, তাহলে সুদ সহ সম্পূর্ণ টাকা আপনার ব্যাংক একাউন্টে ফেরত পেয়ে যাবেন।
কিষান মানধন যোজনায় আবেদন পদ্ধতি
আবেদনে ইচ্ছুক সমস্ত কৃষককে সরাসরি তাদের নিকটবর্তী কাস্টমার সার্ভিস সেন্টার বা CSC পয়েন্টে গিয়ে অফলাইন মাধ্যমে আবেদন জানাতে হবে। এর জন্য অবশ্যই সঙ্গে করে প্রয়োজনীয় নথি হিসাবে- কৃষকের জমির বৈধ দলিল, আধার কার্ড, ব্যাংক একাউন্টের ডিটেলস ইত্যাদি নিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই আপনারা আবেদন জানাতে পারবেন এবং কয়েক ঘন্টার মধ্যেই আপনার পেনশন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হবে।
উপসংহার
ভারতবর্ষের ক্ষুদ্র এবং প্রান্তিক কৃষকদের জন্য এমনিতেই গোটা বছর কঠোর পরিশ্রমের পরেও সঠিক লাভ মেলে না। যার ফলে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার কোনরকম পরিবর্তন দেখা দেয় না। এই সমস্ত কৃষকদের জীবন যাপনের কঠিনতা বিশ্লেষণ করেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এমন দুর্দান্ত প্রকল্পের সূচনা করা হয়েছে। এই প্রকল্প যেমন কৃষকদের বৃদ্ধ অবস্থায় আর্থিকভাবে সুরক্ষা প্রদান করে, তেমনই দেশের প্রায় ৫ কোটিরও বেশি কৃষককে একটি ভরসার ছাতা হিসাবে নিশ্চয়তা দিচ্ছে প্রতিনিয়ত।