Salary Hike: বড়দিনে সরকারি কর্মীদের ডিএ ও পে কমিশন নিয়ে বড় ঘোষণা। পহেলা জানুয়ারি থেকে কার্যকর

New Pay Commission Salary Hike Employee Benefits

সরকারি কর্মীদের (Government Employees) বেতন বৃদ্ধি (Salary Hike) ও নতুন পে কমিশন নিয়ে বিগত অনেক দিন ধরে জল্পনা চলছিল। কিন্তু সেই সব কিছুর অবসান হল বলেই মনে করছেন অনেকে! কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা সপ্তম বেতন কমিশনের (7th Pay Commission) আওতায় মহার্ঘ ভাতা পেয়ে থাকেন (Employee Benefits). একদিকে যেই রকম কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের জন্য নভেম্বরে ৪ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance) বৃদ্ধি করা হয়েছে, এর ফলস্বরূপ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতার পরিমাণ হয়ে দাড়িয়েছে ৫৩ শতাংশ।

Salary Hike Government Employees Benefits

কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের অনেক দিনের দাবি দাওয়া ছিল অষ্টম বেতন কমিশনের (8th pay Commission) আওতায় মহার্ঘ ভাতা কার্যকর করা। এই নিয়ে অনেক জল্পনা কল্পনা চলছে, আগামী অর্থবর্ষে অষ্টম বেতন কমিশন কার্যকর করা হবে এই নিয়ে সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রক মহলে বৈঠক হয়েছে একাধিকবার। সম্প্রতি অন্য আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে শোনা যাচ্ছে, অষ্টম বেতন কমিশন কার্যকর করার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের। এবার থেকে দক্ষতার বিচারে কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি হবে!

8th Pay Commission Latest News

মুদ্রাস্ফীতির হারের নিরিখেও বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। আপাতত এই ব্যাপারটি নিয়েই জোর জল্পনা চলছে নানা মহলে। যদিও সরকারি ঘোষণা হয়নি এখন পর্যন্ত, তবে ধীরে ধীরে এই পথ এগোতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিগত কয়েক মাস ধরে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা অষ্টম বেতন কমিশন কার্যকর করা নিয়ে অনেকবারই চাপ সৃষ্টি করেছে সরকারের ওপর।

তবে সম্প্রতি সংসদে একটি বৈঠকে কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী জানিয়েছেন, এখনই অষ্টম বেতন কমিশন কার্যকর করা নিয়ে কোন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে না বরং এর পরিবর্তে কর্মচারীদের দক্ষতা বা মুদ্রাস্ফীতির নিরিখেই বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া চলছে এমনই মনে হচ্ছে। যদিও সম্পূর্ণ ব্যাপারটির বিরোধিতা করছেন কেন্দ্র সরকারি কর্মীদের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের অনেকেই।

সরকারি কর্মীদের জন্য বড় খবর

তাদের মতে বেতন কমিশনকে তুলে দিয়ে এইভাবে বেতন বৃদ্ধি করা আদৌ যুক্তিযুক্ত হবে কিনা বা কতটা সাফল্য পাবে সে ব্যাপারেই যতটা সন্দেহ প্রকাশ করছেন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। অন্যদিকে, বেশ কিছু কেন্দ্রীয় সরকারি উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের মতে, যেহেতু একটা বেতন কমিশন চালু হতে সময় নেয় অন্তত 10 বছর, এক্ষেত্রে অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হয় সরকারি কর্মচারীদের।

বেতন বা মুদ্রাস্ফীতির নিরিখে বেতন বৃদ্ধি পেলে এক দশক অপেক্ষা করতে হবে না। এই দিক থেকে বর্তমানে আলোচ্য বিষয়টি অনেকটাই উপযোগী বলে মনে করছেন অনেকে। অন্যদিকে দক্ষতার ওপর নির্ভর করে বেতন বৃদ্ধি পেলে কর্মচারীদের যোগ্যতা ও দক্ষতা নিয়েও একটা সুপ্রভাব লক্ষ্য করা যাবে, সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীরা কতটা কি রকম কাজ করছেন সেই দিকেও একটা দিক তুলে ধরবে।

বেতন বৃদ্ধি নিয়ে নতুন সিদ্ধান্তের কারন

সরকারি কর্মীদের যেহেতু দক্ষতার ওপর জোর দেওয়া হয় না, তাই তাদের অনেক সময় কাজের প্রতি অনীহা দেখা যায় বা নিজের সেরাটা দেওয়ার একটা মনোভাব থেকে অনেকেই সরে যায়। দক্ষতার নিরিখে বেতন বৃদ্ধির এই প্রয়াস চালু হওয়ার ফলে প্রত্যেক কর্মচারী নিজের সেরাটা দেওয়ার দিকে মনোনিবেশ করবে এবং সেই সাথে নিজের কাজের প্রতি মনোযোগী হয়ে উঠবে।

এর ফলে একদিকে যেমন তাদের বেতন বৃদ্ধি পাবে, তেমনই আমজনতার সরকারি কাজ গুলি অনেকটাই দ্রুততার সাথে এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন হবে। অনেক সময় এমন অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের দিক থেকে, তারা অনেক ভালো দায়িত্ব গ্রহণ করার পরেও পদোন্নতি হয় না। এক্ষেত্রে নিজের দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে গ্রহণের ফলে তাদের বেতন বৃদ্ধি পাওয়াটাকেও পদোন্নতি হিসেবে ধরে নেওয়া যাবে। সেক্ষেত্রেও যোগ্য কর্মচারীদের পদোন্নতি দেওয়ার ব্যাপারটিতে স্বচ্ছতা বজায় থাকবে।

আর্থিক বিশ্লেষকদের মতে, বেসরকারি কর্মস্থানে যে রকম ভালো কাজের জন্য ইনসেনটিভ এর একটা ব্যাপার রয়েছে, সেই রকমই সরকারি ক্ষেত্রেও ভালো অর্থাৎ সেরা কাজটি দেওয়ার মধ্য দিয়ে বেতন বৃদ্ধির এই প্রয়াস অনেকটা ইনসেনটিভ এর মত কাজ করবে। এই প্রয়াসকে যেমন অনেকেই ভালো বলেছেন এবং সেই পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তি দিয়েছেন, তেমন অনেক সমালোচক এই প্রয়াসকে সমালোচনা করেছেন এবং তার ভিত্তিতেও কিছু যুক্তি দেখিয়েছেন। সেই গুলো সম্পর্কেও নিচে আলোচনা করা হলো।

অনেক সমালোচক এই প্রশ্নই তুলেছেন, কিসের ভিত্তিতে সরকারি কর্মচারীদের যোগ্যতা বিচার করা হবে? কারণ কেন্দ্রীয় সরকারের যে সমস্ত আধিকারিকরা রয়েছেন, তাদের বেশির ভাগই কেন্দ্রের নীতি নির্ধারণের কাজের সঙ্গে জড়িত সেক্ষেত্রে বেসরকারি কর্মস্থলের মতন তাদের নিজের সেরাটার উপর রেটিং দেওয়া সেভাবে সম্ভবপর নয়। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে যে সমস্ত নিচু তলার কর্মী রয়েছেন।

তারা তাদের ওপরে যে অফিসার শ্রেণীর আধিকারিকরা রয়েছেন তাদেরকে খুশি করার জন্য অনেক সময় নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করবেন শুধুমাত্র নিজের সেরাটা দেওয়ার জন্য, যাতে পদোন্নতি হয় বা বেতন বৃদ্ধি পায়। এই ক্ষেত্রে অনেক সময় দুর্নীতি আরো বৃদ্ধি পাবার আশঙ্কা রয়েছে। সরকারি চাকরিতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে তফসিলি জাতি এবং উপজাতি কিছুটা ছাড় পেয়ে থাকে।

নতুন নিয়ম চালু করতে হলে, কেন্দ্রীয় সরকারকে সংশোধন নতুন আইন পাস করতে হবে সেটাও সম্ভবপর নয়, এছাড়া বর্তমান সময়ে যেভাবে এক সঙ্গে সমষ্টিগতভাবে সকল কর্মচারীরা মিলেমিশে কাজ করেন, নতুন নিয়ম চালু হওয়ার ফলে একজন কর্মীর সাথে আরেকজন কর্মীর রেষারেষি থাকবে নিজের সেরাটা দেওয়ার জন্য। সেক্ষেত্রে সমস্ত কাজটিতে বাধা পড়বে, এর ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আমজনতা।

পে কমিশনের ভবিষ্যৎ

সূত্রের খবর, অষ্টম বেতন কমিশন বসলে তাতে ন্যূনতম বেতন ১৮ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২৬-৩০ হাজার টাকায় নিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করা হবে। এছাড়া ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর, যার উপর নির্ভর করে বেতন বৃদ্ধি করা হয় সেটি বর্তমানে রয়েছে ২.৫৭। একে বাড়িয়ে ৩.৫ বা ৩.৮ করার দাবি উঠবে বলে জানা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিভিন্ন রাজ্য সরকার তাদের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি (Salary Hike in New Year) করেন।

পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের জানুয়ারি থেকে বকেয়া DA বৃদ্ধি নিয়ে বড় আপডেট। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার অপেক্ষায়

এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার যদি অষ্টম বেতন কমিশন কার্যকর করেন, তাহলে রাজ্য সরকারের পক্ষে কেন্দ্রের মতন সামঞ্জসতা রেখে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি করা অনেকটা চাপের হয়ে পড়বে, যার ফলে রাজ্যের রাজকোষ অনেকটাই ঘাটতি দেখা দেবে। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের দাবি, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের পয়লা জানুয়ারি থেকে অষ্টম পে কমিশন চালু করা।

জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ বৃদ্ধির সম্ভাবনা কতটা? মাস পড়ার আগেই জেনে নিন নতুন আপডেট।

এই বিষয়ে একটি বৈঠক করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের ‘অল ইন্ডিয়া স্টেট গভর্মেন্ট এমপ্লয়িজ় ফেডারেশন’ নামের কর্মচারী সংগঠন। এখন দেখা যাক সেই বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত উঠে আসে। কেন্দ্রীয় সরকার অষ্টম পে কমিশন কার্যকর করবেন নাকি দক্ষতা ও মুদ্রাস্ফীতির নিরিখেই বেতন বৃদ্ধি করবেন এই সমস্ত বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে কেন্দ্রীয় সরকার এবং অল ইন্ডিয়া স্টেট গভারমেন্ট এমপ্লয়ী ফেডারেশনের নামক সংগঠনের বৈঠকের পরে।

Related Articles

Back to top button