Government Employees: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য কড়া নিয়ম জারি করলো পশ্চিমবঙ্গ অর্থ দপ্তর
সরকারি কর্মীদের কড়া বার্তা
রাজ্য সরকারি কর্মীদের তথা Government Employees জন্য নতুন নিয়ম জারি হলো। মুখের কথা মানেননি অনেকেই, এবার তাই কর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার (Government of West Bengal). পশ্চিমবঙ্গ অর্থ দপ্তর থেকে লিখিত নির্দেশ জারি করে জানানো হয়েছে যে এরপর থেকে সরকারি সমস্ত অফিসে বাধ্যতামূলক হবে বায়োমেট্রিক অ্যাটেনডেন্স (Biometric Attendance), আর খাতায় কলমে উপস্থিতি গণ্য হবে না। আগেই সরকার এই নিয়ে নির্দেশ দিয়েছিল কিন্তু অনেকেই মানেনি। তাই এবার সরাসরি বিজ্ঞপ্তি মারফত তাদের শেষ সতর্কবার্তা দিয়েছে সরকার। এরপরেও না মানলে ভুগতে হবে চরম শাস্তি।
Biometric Attendance for West Bengal Government Employees
এটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থ দফতরের নতুন সিদ্ধান্ত, যা নবান্নে কার্যকর করা হবে। ২০২৩ সালের মে মাসে নবান্নে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হলেও, সেই সময় খাতায় সই করার প্রথা একইসঙ্গে চালু রাখা হয়েছিল। কিন্তু বেশ কিছু কর্মী শুধু খাতায় সই করতে শুরু করেন, বায়োমেট্রিক ব্যবস্থাকে উপেক্ষা করে। এমনকি যারা নবান্নে বদলি হয়ে এসেছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই বায়োমেট্রিক ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় ডেটা জমা দেননি, যার ফলে তাদের বায়োমেট্রিক পদ্ধতি কার্যকর করা সম্ভব হয়নি।
নবান্নের নির্দেশিকা
এই পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, এবার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। অর্থ দফতরের সকল কর্মীদের জন্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতিই একমাত্র “গ্রহণযোগ্য” হাজিরা পদ্ধতি হবে। সেই সঙ্গে নির্দেশে জানানো হয়েছে, যারা বদলি বা পদোন্নতি পেয়ে নবান্নে যোগ দেবেন, তাদেরকে যোগদান করার পরই বায়োমেট্রিক সংক্রান্ত সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। একইভাবে, যারা নবান্ন থেকে অন্য কোনো দফতরে যাবেন, তাদেরকে আগেভাগেই বায়োমেট্রিক পদ্ধতি বন্ধ করার জন্য জানাতে হবে।
আরও পড়ুন, নিজের নামে সর্বোচ্চ কয়টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা যেতে পারে? জানুন RBI-র নিয়ম।
এ ব্যাপারে এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, “পূর্বে বারবার কর্মীদের সতর্ক করা সত্ত্বেও অনেকেই বায়োমেট্রিক ব্যবস্থার প্রতি আগ্রহ দেখাননি। ফলে মাস শেষে হাজিরা রিপোর্ট তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়ছিল। তাই এবার খাতায় সইয়ের ব্যবস্থাকে তুলে দেওয়া হলো।”
সরকারি কর্মীদের গরহাজিরা
এছাড়াও, ২০২৩ সালের মার্চ মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আচমকা নবান্নে গিয়ে বিভিন্ন দফতরের কর্মীদের হাজিরা (Government Employee Attendance) নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সে সময় দুপুর ১২টার পরও ২৫ শতাংশ কর্মী উপস্থিতি দেখতে পান তিনি। এর পরেই অফিসে হাজিরা নিয়ে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী ১০টার মধ্যে কর্মীদের অফিসে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বলেন এবং ৫টার পর অফিস ছাড়ার নির্দেশ দেন। এরপরেই নবান্নে “ফেস রেকগনিশন বায়োমেট্রিক মেশিন” বসানোর কাজ শুরু হয়।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হল সরকারি দফতরে কর্মসংস্কৃতি মজবুত করা এবং হাজিরা নিশ্চিত করা। যদিও বায়োমেট্রিক ব্যবস্থায় (Biometric Attendance) পূর্ণ সফলতা আসেনি, বিশেষত শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দফতরে। তবে অর্থ দফতর এখন সুনির্দিষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, নবান্নে আর খাতায় সই হবে না, শুধুমাত্র বায়োমেট্রিক পদ্ধতিই কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন, Dearness Allowance: অবশেষে ডিসেম্বরেই DA ঘোষণা হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মীদের?
এটি এমন এক সময়ে এসেছিল, যখন সরকারি কর্মীদের অনুপস্থিতি বা সময়ানুবর্তিতা নিয়ে বহুবার সমস্যা উঠেছিল। এক সময়, অর্থ দফতরের প্রধান সচিব এইচ কে দ্বিবেদী (পরে মুখ্যসচিব) আচমকা হাজিরা খাতা চেয়ে গরহাজিরদের নামের পাশে লাল কালির দাগ দিয়ে ছুটির কাটা ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। সেই সময় থেকেই সরকারি দফতরে উপস্থিতির সমস্যাগুলি প্রাধান্য পেতে শুরু করেছিল, এবং এখন সেই সমস্যার সমাধান হিসেবে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিকে একমাত্র গ্রহণযোগ্য মাধ্যম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
রাজ্য সরকার (Government of West Bengal) আশা করছে যে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে কর্মীদের সময়ানুবর্তিতা নিশ্চিত করা যাবে এবং সরকারি দফতরে কাজের গতি বাড়বে। যদিও রাজ্যের কর্মীদের Dearness Allowance, Salary Hike তথা ডিএ ও বেতন বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভ তবে অফিসের সময় ও নিয়মকানুন মেনে চলাও দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।