পি এম কিষাণ যোজনার আওতায় মিলবে ৬০০০ টাকার অনুদান। আবেদন জানাতে এই পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করুন।

সমগ্র ভারতের কৃষকদের সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনা কার্যকর করা হয়েছিল। তবে সমগ্র ভারতের কৃষকদের মধ্যে এই যোজনাটি পি এম কিষাণ যোজনা নামে বিশেষ পরিচিতি। ২০১৮ সালের একেবারে শেষ দিকে চালু হওয়া এই প্রকল্পের আওতায় সমগ্র ভারতের কৃষকদের আর্থিক সহায়তা করা হয়ে থাকে। কৃষকরা যাতে কৃষিক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সার, কীটনাশক, বীজ সহ অন্যান্য জিনিসপত্র কিনতে পারে তার জন্যই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই বিশেষ যোজনা কার্যকর করা হয়েছে। সমগ্র ভারতের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের আয় নিশ্চিত করার জন্যই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তরফে এই বিশেষ প্রকল্প কার্যকর করা হয়েছে। আপনিও যদি ভারতের একজন কৃষক হয়ে থাকেন এবং পি এম কিষাণ যোজনার আওতায় আবেদন জানাতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তবে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য একেবারে পারফেক্ট। আজ্ঞে হ্যাঁ, আজকের এই বিশেষ পোস্টে আমরা প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনা সংক্রান্ত সমস্ত প্রকার তথ্য নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি।

প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনার আওতায় আপনারা কি সুবিধা পাবেন:-

প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি বা পি এম কিষাণ যোজনার আওতায় কৃষকরা প্রত্যেক বছরের ৬,০০০ টাকার অনুদান পেয়ে থাকেন। এই অনুদানের টাকা তিনটি কিস্তির মাধ্যমে কৃষকদের ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি ট্রান্সফার করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ পি এম কিষাণ যোজনার আওতায় প্রত্যেক কিস্তিতে ২০০০ টাকা করে কৃষকদের দেওয়া হয়ে থাকে।

কারা পি এম কিষাণ যোজনার আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন?

১. ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, কেবলমাত্র ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী কৃষকরাই এই প্রকল্পের আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন।
২. যে সমস্ত কৃষকদের নিজস্ব জমি রয়েছে তারাই কেবলমাত্র পি এম কিষাণ যোজনার আওতায় আবেদনের ক্ষেত্রে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

পি এম কিষাণ যোজনার আওতায় কৃষকের নাম নথিভুক্ত করার জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া:-

কৃষকদের সুবিধার খাতিরে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে পি এম কিষাণ যোজনার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট কার্যকর করা হয়েছে। আর বর্তমানে আপনারা বাড়িতে বসেই এই যোজনার অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পি এম কিষাণ যোজনার আওতায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। তবে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদনের ক্ষেত্রে আপনাকে যে যে ধাপগুলি অনুসরণ করতে হবে তা হল-

১. বাড়িতে বসে পি এম কিষাণ আওতায় নিজের নাম নথিভুক্ত করার জন্য আপনাকে পৌঁছে যেতে হবে পি এম কিষাণ যোজনার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://pmkisan.gov.in/ -এ।

gamezop ad

২. এরপর পি এম কিষাণ যোজনার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের হোম পেইজের নিচের দিকে থাকা FARMERS CORNER -এর আওতাধীন New Farmer Registration অপশনে ক্লিক করুন। পরবর্তীতে আপনার সামনে যে পেজটি চলে আসবে তাতে আপনি গ্রামে বসবাসকারী কৃষক নাকি শহরে বসবাসকারী কৃষক তা সঠিকভাবে নির্বাচন করে নিতে হবে। এরপর আপনার আধার নম্বর, ফোন নম্বর সঠিকভাবে লিখুন এবং আপনি কোন রাজ্যে বসবাস করছেন তা সঠিকভাবে নির্বাচন করুন। সবশেষে ক্যাপচা কোডটি পূরণ করে GET OTP অপশনে ক্লিক করার মাধ্যমে OTP ভেরিফিকেশনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করুন।

apply-pm-kisan-yojana

৩. OTP ভেরিফিকেশনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হলে পুনরায় আপনার আধার কার্ডের সাথে যুক্ত মোবাইল নম্বরটিতে একটি OTP আসবে। এই OTP টি সঠিক স্থানে সঠিকভাবে প্রদান করার মাধ্যমে আধার ভেরিফিকেশনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করুন।

৪. আধার ভেরিফিকেশনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হলেই আপনার সামনে একটি নতুন পেজ চলে আসবে, যাতে আপনি পি এম কিষাণ যোজনার আওতায় রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রয়োজনীয় ফর্মটি পেয়ে যাবেন। ফর্ম পূরণের ক্ষেত্রে ফর্মের একেবারে শুরুতেই আপনাকে আপনার রাজ্য, জেলা, সাব-ডিস্ট্রিক, ব্লক এবং গ্রামের নাম নির্ভুলভাবে উল্লেখ করে নিতে হবে।

আরও পড়ুন:- মাধ্যমিকে কত শতাংশ নম্বর পেলে গ্রামীণ ডাক সেবক রূপে চাকরি পাওয়া যায়, জেনে নিন।

৫. পরবর্তীতে আপনি আপনার নাম, আধার নম্বর, মোবাইল নম্বর, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, ক্যাটেগরি, land registration ID, রেশন কার্ড নম্বর, Farmer Category সঠিকভাবে নির্বাচন করে নিন। কৃষকের সুবিধার্থে জানিয়ে রাখি যে, Farmer Category -এর আওতায় Small farmer এবং others নামক দুটি অপশন রয়েছে। আপনার জমির পরিমাণ যদি যদি ১ থেকে ২ হেক্টর -এর মধ্যে হয়ে থাকে তবে Small farmer অপশনটি নির্বাচন করুন। অন্যদিকে আপনি যদি ১ থেকে ২ হেক্টর -এর তুলনায় কম জমির মালিক হয়ে থাকেন তবে others অপশন দিতে ক্লিক করুন।

৬. পরবর্তীতে আপনি ownership (land holding) -এর আওতায় single এবং joint নামক দুটো অপশন দেখতে পাবেন। আপনার জমি যদি আপনার নামে রেকর্ড হয়ে থাকে তবে single অপশনটি নির্বাচন করুন এবং জমির যদি একাধিক মালিক থেকে থাকে তবে joint অপশনটি নির্বাচন করুন।

৭. এরপর ফর্মে উল্লেখিত Add অপশনে ক্লিক করুন এবং আপনার জমির দাগ নম্বর, খতিয়ান নম্বর, আপনার নামে কত হেক্টর জমি নথিভুক্ত রয়েছে, Land Transfer Status, Land Transfer Details, Land Date Vesting সহ প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রকার তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখ করুন। এক্ষেত্রে আপনি Land Transfer Status -এর আওতায় দুটি অপশন দেখতে পাবেন Before 01-02-2019 এবং After 01-02-2019 । আপনার জমিটি যদি 01-02-2019 তারিখের পূর্বে রেজিস্টার্ড হয়ে থাকে তবে Before 01-02-2019 অপশনটি বেছে নিন। অন্যদিকে আপনার জমিতে যদি 01-02-2019 তারিখের পরে রেজিস্টার্ড হয়ে থাকে তবে After 01-02-2019 অপশনটি বেছে নিন।

৮. এরপর Land Transfer Details -এর অধীনে আপনি জমিটি কিভাবে পেয়েছেন তা উল্লেখ করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি যদি আপনার স্বামীর মৃত্যুর পর জমিটি পেয়ে থাকেন তবে Husband’s death অপশনটি বেছে নিন। অন্যদিকে আপনি যদি আপনার পিতার মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার সূত্রে চাষযোগ্য জমি পেয়ে থাকেন তবে Father’s Death অপশনটি বেছে নিন। এছাড়াও আপনি যদি আপনার আপনার পূর্বপুরুষের জমি বংশানুক্রমে পেয়ে থাকে তবে Ancester Land অপশনটি বেছে নিতে হবে। আপনি যদি জমিটি অন্য কোন ব্যক্তির থেকে কিনে থাকেন তবে Purchase of Land অপশনটি বেছে নিন। আবার আপনি যদি আপনার পূর্বপুরুষ দান সূত্রে জমি পেয়ে থাকেন তবে Gifted অপশনটি বেছে নিন।

৯. পরবর্তীতে Land Date Vesting অপশনের অধীনে আপনার জমিটি কত সালের কত তারিখে আপনার জমিটি রেকর্ড করা হয়েছে তা সঠিকভাবে উল্লেখ করুন।

১০. যে সমস্ত কৃষকদের একের অধিক জমি রয়েছে তারা ফর্মে উল্লিখিত Add অপশনটিতে ক্লিক করে তাদের নামে রেকর্ড করা রয়েছে এইরূপ জমির সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করুন। সবশেষে ফর্মে উল্লেখিত সমস্ত নথিগুলি সঠিকভাবে আপলোড করুন এবং Submit অপশনে ক্লিক করুন। তাহলেই পি এম কিষাণ যোজনার আওতায় নাম নথিভুক্ত করার জন্য আবেদনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে। কৃষকদের সুবিধার্থে জানিয়ে রাখি যে, আবেদনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হলে পোর্টালের তরফে আপনাকে একটি Farmer ID দেওয়া হবে। এই আইডিটি পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন হবে, সুতরাং এটি অতি অবশ্যই কপি করে রাখবেন।

আবেদনের ক্ষেত্রে কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে?

১. আধার কার্ড
২. জমির রেকর্ড
৩. আবেদনকারীর ব্যাংক একাউন্টের সমস্ত তথ্য।

Related Articles

Back to top button