পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের অফিস টাইম ৮ ঘন্টা থেকে কমে ৬ ঘন্টা হচ্ছে। কি অর্ডার প্রকাশিত হল?
Government Employees Working Hours
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর! ফেব্রুয়ারির রাজ্য বাজেটেই রাজ্যের কর্মীদের জন্য ডিএ বাড়িয়ে ১৮ শতাংশ করেছে রাজ্য সরকার। এপ্রিল থেকেই যা ঢুকবে সবার অ্যাকাউন্টে। এবার আরও একটি কর্মচারী সুবিধার (Government Employee Benefits) কথা ঘোষণা হলো।
সরকারি কর্মীদের কাজের সময় কমে গেল
নবান্নের এক নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাজ্য সরকারি কর্মীদের সুবিধার চিন্তা করে ডিউটি টাইম বা Working Hours ও ২ ঘন্টা কমিয়ে দেওয়া হল। ৮ ঘন্টা নয় বরং দিনে ৬ ঘণ্টা করে কাজ করবেন এবার রাজ্য সরকারি কর্মীরা। মূলত প্রচণ্ড গরমের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এই সুবিধা কিন্তু এবার নির্দিষ্ট কিছু বিভাগের কর্মীদের জন্যই ঘোষণা করা হয়েছে। কারা রয়েছেন তালিকায়?
কেন নেওয়া হলো এই সিদ্ধান্ত?
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রা লাগাতার ৪০ ডিগ্রির আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। মার্চের শুরুতেই তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে, যা সাধারণত এপ্রিল-মে মাসে দেখা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী দিনে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। তাই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যাতে কর্মীরা সুস্থ থেকে তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে পারেন।
কীভাবে বাস্তবায়ন হবে নতুন নিয়ম?
নবান্নের নির্দেশ অনুযায়ী, নতুন সময়সূচি অবিলম্বে কার্যকর করা হবে। অর্থাৎ, যাঁরা এতদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাজ করতেন, তাঁদের কাজের সময় এখন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৩টা বা দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হবে। তবে, প্রয়োজনে এই সময়সূচিতে পরিবর্তন আনা হতে পারে।
কোন বিভাগের কর্মীরা পাবেন এই সুবিধা?
প্রাথমিকভাবে, এই সুবিধা পাবেন ফিল্ড ওয়ার্কে যুক্ত সরকারি কর্মীরা, বিশেষ করে ট্রাফিক পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা, যাঁদের দিনের বেশিরভাগ সময় রাস্তায় কাটে। কলকাতা ও রাজ্যের অন্যান্য শহরগুলিতে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে তাঁদের ওপর শারীরিক চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছিল। ফলে কর্মীদের সুরক্ষার কথা ভেবেই ডিউটির সময় ২ ঘণ্টা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন, রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাউন্টে টাকা ঢুকবে, জেনে নিন।
সরকারি চাকরি মানেই যে শুধু অফিসের এয়ার-কন্ডিশন্ড ঘরে বসে কাজ করা নয়, তা সকলেরই জানা। বহু বিভাগে কর্মীদের বাইরে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করতে হয়, বিশেষ করে ট্রাফিক পুলিশ, পুরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী, এবং ফিল্ড অফিসারদের। অতিরিক্ত গরমের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। নবান্নের এই পদক্ষেপ তাঁদের কর্মদায়িত্বকে কিছুটা লাঘব করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সাধারণ সরকারি কর্মীদের জন্য কি এই সুবিধা?
প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র ফিল্ড ডিউটিতে থাকা কর্মীদের জন্য এই নিয়ম চালু করা হচ্ছে। অর্থাৎ, যারা অফিসে বসে কাজ করেন, তাঁদের কাজের সময়সীমায় বা অফিস টাইমে কোনো পরিবর্তন আসছে না। তবে চরম গরমের কারণে অফিস সময়েও কিছুটা শিথিলতা আনা হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন, মাত্র ৪৪৪ দিনে লাখ টাকা পাবেন। এই সরকারি সঞ্চয় প্রকল্পে আজই বিনিয়োগ করুন।
কর্মীদের প্রতিক্রিয়া কী?
এই ঘোষণার পরেই ট্রাফিক পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর কর্মীদের মধ্যে স্বস্তির হাওয়া বইছে। একজন ট্রাফিক কনস্টেবল জানান, “তীব্র রোদে দাঁড়িয়ে কাজ করা অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে উঠছিল। নতুন নিয়ম চালু হলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবো।”
এদিকে, বিরোধী দলগুলোর দাবি, এই পদক্ষেপ যদিও ভালো, তবে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু কর্মীদের জন্য নয়, বরং অন্যান্য বিভাগেও এর প্রভাব পড়া উচিত।